হুগলি: হুগলি (Hoogly) জেলার প্রাচীন জনপদগুলির মধ্যে অন্যতম বলাগড়। সেই বলাগড়ের জিরাটে রয়েছে সিদ্ধেশ্বরীর মন্দির। প্রায় হাজার বছরের পুরানো এই কালীর আবির্ভাব নিয়ে যে গল্প শোনা যায়, তা বেশ রোমাঞ্চকর। কথিত আছে ডাকাত অধ্যুষিত গঙ্গাতীরের কালিয়াগড়ের একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন কালী বা কেলে ডাকাত। তিনি দেবী সিদ্ধেশ্বরীর উপাসক ছিলেন। কিন্তু কেলে ডাকাতের মৃত্যুর পর জঙ্গলে ঘেরা এই জায়গায় মানুষের যাতায়াত সেভাবে না থাকায় এক সময় জরাজীর্ণ অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায় মা সিদ্ধেশ্বরীর পুজোপাঠ।
এর প্রায় ৬০০ বছর পর গঙ্গার ঠিক পূর্বপাড়ে নদিয়া জেলার মুখুজ্জ্যে পরিবারের কোনও এক সদস্য আত্মহত্যা করতে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। তিনি ছিলেন কালীভক্ত। অবিশ্বাস্যভাবে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। পরদিন গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে তাঁকে পাওয়া যায়। শোনা যায়, ওই ব্যক্তিকে যখন উদ্ধার করা হয় সামনের জঙ্গলের মধ্যে আরাধনার বিভিন্ন উপকরণ-সহ দেবীর দর্শন পান। এরপরই ফের সিদ্ধেশ্বরী দেবীর পুজো শুরু করেন মুখোপাধ্যায় পরিবারের লোকেরা।
যা আজও তাদের মেয়ের বংশের সদস্যরা করে আসছেন। বর্তমানে মন্দির-সহ এলাকার সংস্কার হলেও মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলাকীর্ণ এলাকা কেলে ডাকাতের সেই গল্পের কথাই মনে করিয়ে দেয়। কালীপুজোর দিন ছাড়াও প্রতি অমাবস্যায় এখানে সিদ্ধেশ্বরীর পুজো হয়। তবে কার্তিকের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যায় বহু মানুষের সমাগম হয়। বাইরে থেকেও লোক আসেন। দেবীকে মনের আশা জানিয়ে মানতও করেন। সেই পুজোও হয় এদিন। এই পুজোর জন্য দিন গোনেন এলাকার মানুষও।