হুগলি: একই বাড়িতে থাকেন। হাঁড়ি আলাদা হলেই বা কী, রান্নাবান্না সেরে এক জা চলে আসেন আরেকজনের ঘরে। তখন হয়ত দ্বিতীয়জনের রান্না চলছে। রান্নাও চলতে থাকে, চলতে থাকে দুই জায়ের গপ্পোও। কখনও কখনও রান্নার কড়াই নামিয়ে, খানিকটা চায়ের জলও ফুটিয়ে নেন। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতেই দুই জায়ের হাসি তামাশা, আড্ডা চলে। সেই দুই জা এবার ভোটের ময়দানে যুযুধান। প্রতীক আলাদা, দল আলাদা। হরিপালের আশুতোষ গ্রামপঞ্চায়েতের দে পরিবারের দুই জা। একজন তৃণমূলের প্রার্থী, অন্যজন বিজেপির।
গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটের এটাই মজা। একই বাড়ি থেকে কারও হাতে শাসকদলের পতাকা, কারও হাতে আবার বিরোধীদের। একই ছাদের তলায় থাকেন তাঁরা। কারও কারও আবার হাঁড়িও এক। তবে রাজনীতির আদর্শে কেউ ডান, কেউ বাম, কেউ বা বিজেপি। গ্রামপঞ্চায়েতগুলির ক্ষেত্রে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে একই বাড়ির দুই ছেলে বা দুই বৌমা ভোটে লড়ছেন।
আশুতোষ গ্রামপঞ্চায়েতের গুপিনগর গ্রামের ১৪৫ নম্বর বুথ। সেখান থেকেই তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন তরুছায়া দে, বিজেপির প্রার্থী দিপালী দে। একই বাড়ির বৌমা তাঁরা। পাড়ার লোকজনের দারুণ আগ্রহ এই দুই প্রার্থীকে নিয়ে। রাজনীতির ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও ঘরে দু’জনের বেশ ভাব।
এতটাই দু’জনের সখ্যতা, বাড়িতে যখন দু’জন গল্প করেন, কার কেমন প্রচার চলছে, সে খোঁজও চলে। দু’জনই এই প্রথমবার ভোটে লড়ছেন। সারাদিন ঘরের কাজের সঙ্গে প্রচারও করছেন জোর কদমে। জয় নিয়ে দু’জনই বেশ আত্মবিশ্বাসী।
তৃণমূলের প্রার্থী তরুছায়া দে’র কথায়, “আমার বড় জা তৃণমূল করে। সেটা ওর পছন্দ। আবার আমি বিজেপি করি সেটা আমার পছন্দ। প্রচারে বেরিয়ে মানুষের সারা পাচ্ছি। আমি ভোটের ফল নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদীও। রাজনীতির মাঠে আমিও এক চুল মাটি ছাড়তে রাজি নই।”
বিজেপি প্রার্থী দিপালী দের কথায়, “আমরা দুই জা প্রার্থী হয়েছি। ও যে দলের উপর ভরসা রাখে সেই দলের প্রার্থী হয়েছে। আমি যার সঙ্গে থাকা ঠিক মনে করেছি, তার সঙ্গেই আছি। লড়াইয়ের ময়দানে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ার প্রশ্ন নেই। তবে রাজনীতির লড়াইটা রাজনীতির লড়াই। আর পরিবারটা পরিবার। সেখানে আমাদের দুই জায়ের সম্পর্ক যেমন, তেমনই থাকবে।”