হুগলি: তিন তিনটি হাঁস মারা যাওয়ায় হাউ হাউ করে কেঁদেছিলেন মহিলা। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তাঁর বাড়িতে গিয়ে হাতে তুলে দিলেন হাঁস। এবার আবেগপ্রবণ হয়ে চোখে জল চুঁচুড়ার সিংহীবাগানের ইতি বিশ্বাসের। ইতি বাড়িতে ১০টি হাঁস পালন করতেন। কিছুদিন আগে তাঁর ৩টি হাঁস মারা যায়। ডিম পাড়া হাঁসের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ইতি। তাঁর সন্দেহ ছিল, তাঁর তিনটি হাঁসকে মেরে ফেলা হয়েছে। আপাতত ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় ইতি। তবে এরইমধ্যে ৯টি ডিম পাড়া হাঁস তাঁর হাতে তুলে দিল হুগলি জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দফতর।
চুঁচুড়ার সিংহীবাগানের বাসিন্দা ইতি বিশ্বাসের ১০টি হাঁস ছিল। সেই হাঁসের ডিম বিক্রি করে সংসারে একটু সাশ্রয় হতো ইতির। খুব কষ্টের সংসার তাঁর। স্বামী বিছানায়, ছোট ছেলের ব্লাড ক্যান্সার। স্কুলের সামনে পাঁপড়ভাজা বিক্রি করে দিন চলে তাঁদের। এই ডিম সত্যিই তাঁর কাছে ‘সোনার ডিম’।
গত ২০ জানুয়ারি ৩টি হাঁসের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ইতি জানান, সেদিন হাঁসের ঘর খোলার পর দেখেন তিনটি হাঁস মুড়ি খেয়ে ছটফট করছে। দরজা খুলতেই দেখেন জলের দিকে যাচ্ছে। ঘরে একটি মুড়ির প্যাকেট রাখা ছিল। তা থেকে বাজে গন্ধ আসছিল বলে জানান তিনি। সেখান থেকেই সন্দেহের সূত্রপাত। ইতির বক্তব্য, হাঁসগুলিকে মেরে ফেলা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত চেয়ে চুঁচুড়া থানা জেলা পশু হাসপাতালের দ্বারস্থ হন। কোনও সাহায্য না পেয়ে হুগলি জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তীকে বিষয়টি জানান। তিনিই গত ২৪ তারিখ ইতিকে নিয়ে থানায় যান। অভিযোগ দায়ের হয়। মৃত হাঁসগুলির ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়।
কলকাতায় ভিসেরা রিপোর্টের জন্য নমুনা পাঠানো হয়। যদিও রিপোর্ট এখনও আসেনি। তবে শনিবার কর্মাধ্যক্ষ ৯টি ডিম পাড়া হাঁস ইতির হাতে তুলে দেন। ইতি বলেন, “কর্মাধ্যক্ষ স্যরের জন্য আমি হাঁসের ময়নাতদন্ত করাতে পেরেছি। আজ আমার বাড়িতে এসে উনি হাঁস দিয়ে গেলেন। আমার খুবই উপকার হবে।”