হাওড়া: ফের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasth Sathi Card) নিয়ে রোগী হয়রানির অভিযোগ। এবার অভিযোগ উঠল হাওড়ার শিবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে হাসপাতালের বিল মিটিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও ফোন করে টাকা চান বলে অভিযোগ। তদন্ত শুরু করছে পুলিশ।
স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকা সত্ত্বেও রোগীর পরিবারের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠল শিবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। বৃদ্ধ রোগীর পরিবারের তরফে শিবপুর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাজকুমার সিং (৭১) নামে শিবপুরের এক বাসিন্দা সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। গত ৯ সেপ্টেম্বর তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। ডান পায়ে অস্ত্রপচার হওয়ার পর ওই বৃদ্ধের ছেলে আদিত্য কুমার সিং জানান, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসার খরচ মেটানো হলেও এক চিকিৎসক হাসপাতালের এক কর্মীকে দিয়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা চান তাঁর কাছে। এমনকি তিনি যখন হাসপাতালে তখন তাঁর পরিবার লোকজনকে ফোন করে ওই টাকা চান তিনি। অভিযোগ, তিনি পরামর্শ দেন, সরাসরি তাঁর হাতে টাকা না দিয়ে হাসপাতালের এক কর্মীর হাতে দিয়ে দিলেই হবে।
স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসার খরচ মেটানোর পরও কেন তাঁদের কাছে নগদ টাকা চাওয়া হল? আর একজন চিকিৎসক কীভাবে ফোন করে এভাবে টাকা চাইতে পারেন, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধের ছেলে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শিবপুর থানার পুলিশ।
এদিকে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের প্রতিক্রিয়া চাইতে গেলে ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার সঙ্গীতা হাজরা জানান, হাসপাতালের অনেক চিকিৎসকই ভিজিটিং কনসালটেন্ট হন। তাঁরা বেতন পান না। সেক্ষেত্রে কেউ যদি হাসপাতালের বাইরে টাকা চেয়ে থাকেন, তাহলে সে ব্যাপারে হাসপাতালের কিছু করার নেই। হাসপাতাল ওই রোগীর পরিবারের থেকে কোনও টাকা চায়নি। এটা পরিষ্কার। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত চিকিৎসক অবশ্য এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুরে। মহামায়া পাহাড়ি নামে এক মহিলা প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন সত্যসাঁই সেবা সদনে। রোগীর স্বামী অনন্ত পাহাড়িকে জানানো হয়, পরিষেবা বাবদ প্রতিদিন ২৫ হাজার টাকা করে চার্জ হাসপাতালের। রোগীর আত্মীয় স্বজন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার জন্য আবেদন করেন। সেই টাকা নিয়ে যখন দর কষাকষি করছে হাসপাতাল, তখন রোগীর অবস্থা ক্রমশ সঙ্কটকজনক হয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু করার জন্য মহামায়া দেবীর পরিবারের লোকজন ২৪ তারিখ নগদ ২০ হাজার টাকা সত্যসাঁই সেবা সদনে জমা দেন। পরের দিন অর্থাৎ, ২৫ জুলাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চাপে পুনরায় নগদ ২০ হাজার টাকা জমা দেন রোগী পরিবার। সবমিলিয়ে রোগীর পরিবার ৪০ হাজার টাকা জমা দেন।
কিন্তু তার পরেও দিন রাতেই মহামায়া দেবী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রোগীর পরিবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা হেতু টাকা ফেরতের দাবি করেন। অভিযোগ, সেই আবেদনে কর্ণপাত না করে অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ‘গদ্দারদের খুঁজে বের করে চা বওয়ানোর কাজ করান,’ শুভেন্দুর গড়ে দাঁড়িয়ে পরামর্শ সায়নীর