উলুবেড়িয়া: নাম না করে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বদের ‘বেইমান’, ‘ঘর শত্রু বিভীষণ’, ‘তৃণমূলের সঙ্গে সেটিং করে চলা’ লোক বলে আক্রমণ শানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ, এসব অযোগ্য নেতৃত্বদের জন্য বহু মানুষ বসে যাচ্ছেন এবং তাঁরা আগামীদিনে অন্য দলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। পশ্চিমবঙ্গে যে ভাবে বিজেপি চলছে, তাতে দলের নীচুতলার বড় একটি অংশ অসন্তুষ্ট বলেও দাবি অনুপমের। এই অবস্থায় শাসক দলের সঙ্গে কীভাবে লড়াই করবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনে অমিত শাহের বেঁধে দেওয়া আসন জেতার লক্ষ্যমাত্র কী ভাবে পূরণ করা যাবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনুপম। হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপির দলীয় কার্যালয় মনসাতলার অদূরে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের ডাকে এক কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই অনুপম হাজরা এই মন্তব্য করেছেন। বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেও তৃণমূল, বিজেপি এবং বামেদের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য এ দিন শোনা যায়নি অনুপমের মুখে।
রবিবারের ওই কর্মিসভা থেকে অনুপম হাজরা বলেছেন, “বসে যাওয়া, বঞ্চিত হওয়া, পদহীন, মোদী ভক্ত বিজেপি কর্মীদের চাঙ্গা করতে নেমেছি আমি। একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, সেখানে এক বিজেপি নেতাকে বলতে শোনা গেছে আজকের আমার এই অনুষ্ঠানে যেন না আসে। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে বহু বিজেপি কর্মী সমর্থকদের। ওই বিজেপি নেতৃত্বদের বক্তব্য অনুপম হাজরা বিজেপির কেউ নয়। তৃণমূল বাধা দিলে অন্য কথা। বিজেপির মিটিংয়ে লোক আসতে বাধা দিচ্ছে বিজেপির নেতৃত্বরাই। আবার তাঁদেরকেই জেলার নেতৃত্বের পদে বসিয়ে রেখেছে রাজ্য নেতৃত্বরা। যারা বিজেপির মিটিংয়ে বিজেপির লোকেদেরকে আসতে বাধা দিচ্ছে তাঁরা প্রত্যেকেই বেইমান।” তিনি আরও বলেন, “এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। সবাই চাইছে মোদীর তৃতীয়বারের জন্য আবার প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই একজোট হয়ে লড়তে চাইছেন। যাঁরা ঘর শত্রু বিভীষণ তাঁরা চাইছেন না মোদীজি তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসুক। এরা বেইমান। শাসক দলের সঙ্গে সেটিং করে চলছেন তাঁরা। একটা পঞ্চায়েতে জিততে পারছে না অথচ জেলা সভাপতি রাখা হয়েছে।”
২৯ নভেম্বর ধর্মতলায় সভা হবে বিজেপি। সেই সভায় উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু সেই সভায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন অনুপম হাজরা। এ নিয়ে ক্ষোভও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। যদিও এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। দলের রাজ্য সভাপতি এ বিষয়ে বলতে পারবেন।”