হাওড়া: একটা দিনের বিরতি। আবারও একই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এল। নারকেলডাঙার পর এবার হাওড়ায় অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জলে ভেসে আসা জঞ্জাল সাফাই নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু তার চরম মাশুল দিতে হল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতার ডেকে আনা দুষ্কৃতীদের মারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে মহিলার গর্ভে থাকা সন্তান। বিষয়টি যদিও অস্বীকার করেছেন ওই তৃণমূল নেতা। অপরদিকে, প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন আহত মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া লিলুয়া থানা এলাকার ভট্টনগরে। গোটা বিষয়টি জানিয়ে লিলুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে আক্রান্ত পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ অগস্ট দুপুরে ভট্টনগর আমবাগান এলাকার বাসিন্দা রামকরণ রায় বাড়ির সামনে বৃষ্টির জলে ভেসে আসা জঞ্জাল পরিষ্কার করছিলেন। এর প্রতিবাদ করেন প্রতিবেশী লক্ষ্মী তালুকদার। দু’ক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ বচসা এবং ঝামেলাও হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তা মিটেও যায়। তবে ঘটনা অন্য মোড় নেয় ওইদিন রাতেই।
আক্রান্ত পরিবারের অভিযোগ, ওই প্রতিবেশীর ডাকে জনা পনেরো দুষ্কৃতী নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলা চালান স্থানীয় তৃণমূল নেতা কেশব হালদার। বেধড়ক মারধর করা হয় রামকরণের স্ত্রী ঊর্বশী রায়কে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় গুরুতর আহত হন তিনি। মারধরের পর দুষ্কৃতীরা চম্পট দিলে ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়া জেলা হাসপাতাল।
গর্ভে থাকা চার মাসের সন্তানের মৃত্যু হলেও প্রাণে বেঁচে যান তিনি। সুস্থ হওয়ার পর তাঁকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। এরপর রামকরণ ১৮ অগস্ট লিলুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে লিলুয়া থানার পুলিশ সোমবার রাত্রে দু’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূ্তের খবর, ধৃতদের নাম প্রেম তালুকদার ও তার ছেলে প্রকাশ তালুকদার। ধৃতদের মঙ্গলবার হাওড়া আদালতে তোলা হয়। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, গোটা বিষয়টি পারিবারিক সমস্যা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এ দিকে, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা কেশব হালদার তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যেবেলা আমি ওই এলাকায় ছিলাম না। তাই কী ঘটেছে তা নিয়ে আমার কিছুই জানা নেই।’
উল্লেখ্য, রবিবার ঠিক একই ঘটনা সামনে আসে কলকাতার নারকেলডাঙা থেকে। বাড়িতে ঢুকে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মারার অভিযোগে নাম জড়ায় বিধায়ক পরেশ পাল, কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষ এবং প্রাক্তন কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত মহিলার অভিযোগ, বাড়ি প্রমোটিংয়ের জন্য বিবাদ বাধে পরেশ পালের অনুগামীর সঙ্গে। রবিবার সেই ঝামেলা ওঠে চরমে। তারপরই অন্তঃসত্ত্বাকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা পরেশ পাল ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তাঁরা।