হাওড়া: শাসকদলের সঙ্গে সিবিআই-এর বোঝাপড়া, এবার বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের এই তত্ত্বেই সায় দিলেন বালির নিহত তৃণমূল নেতা তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। সিবিআই তদন্তে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ ও হতাশ বালির প্রয়াত তৃণমূল নেতা তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। দীর্ঘ ১২ বছর লড়াইয়ের পর চার মাস আগে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্তভার হাতে নেয়। ছ’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও প্রায় চার মাস হতে চলল সিবিআই-এর তরফ থেকে কোন সক্রিয় পদক্ষেপ না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিমা। এক্ষেত্রে তিনি দিলীপ ঘোষের সিবিআই সেটিং করার তত্ত্বে সহমত পোষণ করছেন। এই মামলার ক্ষেত্রেও গট-আপ হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁর ধারণা।
প্রতিমা বলেন, “চার মাস হয়ে গেলেও সিবিআই এখনও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। দিলীপদার কথা শুনে আমি চিন্তিত। আমার সিবিআই-এর আইও সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি। ফোন ধরেছিলেন। আমার আইনজীবীর সঙ্গেও কথা হয়। তিন চার দিনের মধ্যে দেখা করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত করেনি। আজ যাদের সঙ্গে লড়াই করছি, তাঁরা খুবই পয়সাওয়ালা। এরকমটা হয়েও যেতে পারে।”
প্রতিমা দত্ত জানান, সিবিআই-এর ভারপ্রাপ্ত তদন্তকারী অফিসারকে একমাস আগে ফোন করেন তিনি। দেখা করার আশ্বাসও দেন। কিন্তু তারপর আর কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। বাধ্য হয়েই তিনি আবার মহামান্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন।
২০১১ সালের ৪ মে খুন হন বালির পরিবেশকর্মী তপন দত্ত। তাঁকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। কাঠগড়ায় ওঠে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা কর্মী-সহ ১৩ জনের নাম। ঘটনার সাত দিনের মাথায় তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। এরপর সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁর স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। মামলা চলে এতদিন। তারপরই এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।
কিন্তু এখনও সিবিআই প্রতিমা দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করেনি বলে অভিযোগ। দুই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে শোরগোল পড়েছে। দিলীপ ঘোষ রবিবার বলেছিলেন, “গত কয়েকমাস ধরে এখানে সিবিআই তদন্ত চলছিল। কিন্তু তার কোনও প্রভাব ছিল না, কোনও তথ্য আসছিল না, কেউ ধরা পড়ছিল না। কারণ কী? সর্ষের মধ্যে ভূত ছিল। জানার পর কিছু অফিসারকে পরিবর্তনও করা হয়েছে। যা হয় আর কী। সবার একটা পেট আছে। সবাই বিক্রি হয়। তাঁর দাম থাকে। কেউ লাখে, কেউ কোটিতে, কেউ একশো কোটিতে। সেভাবে বিক্রি হচ্ছিল। এটা সরকার বুঝতে পেরেছে। আমি যতদূর শুনেছি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বিশেষ প্রয়াসে ইডি এসেছে। তারপর কাজ শুরু হয়েছে। যারা সেটিং করছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ মন্তব্যও করেছেন, এতদিন তো কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছিল। ইডি কোথা থেকে ছুটে এল। ইডিকে সরানোর জন্য কোর্টেও গেছে।” দিলীপের এই সেটিং তত্ত্বকে সায় দিচ্ছেন প্রতিমাও।