বাগনান: বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে বিজেপি কর্মীর অসুস্থ স্ত্রী’কে। এলাকার তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে উঠল এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। হাওড়ার বাগনানের বাইনানের এই গণধর্ষণের ঘটনায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সহ মোট চারজনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে। গণধর্ষণের পর তাঁকে বেঁধে বাড়িতে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। উলুবেড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে ওই মহিলার। এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। তবে তৃণমূল নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এই অভিযোগ নিয়ে ঘাসফুল শিবিরের কোনও নেতা মুখ খোলেননি।
নির্যাতিতার স্বামীর অভিযোগ, শনিবার যে সময় বাড়িতে তিনি ছিলেন না, সেই সময় এই ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ১২ টা থেকে ১ টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। নির্যাতিতার ছেলে সকালে দেখে, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে তার মা। তাঁর গায়ের ওপর ফেলে দেওয়া হয়েছে বাইক। সেই দৃশ্য দেখেই সবাইকে ডাকে তাঁর ছেলে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাগনান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে উলিবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি। তবে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, বেশ কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করেছে ৩৪ বছর বয়সি ওই মহিলাকে।
মহিলা স্বামী জানান, কেউ বাড়িতে না থাকার সুযোগে হাজির হন একদল দুষ্কৃতী। দরজা খুলতেই ওই মহিলাকে টানতে টানতে নিয়ে যায় চার-পাঁচজন মিলে।পরে ধর্ষণ ও শারীরিক নিগ্রহের পর তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আরও জানান, ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই তাঁকে নানা ধরনের অত্যাচারের শিকার হতে হচ্ছিল। পাশে একটি নির্ণীয়ান বাড়িতে মদ-গাঁজার ঠেক চলে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে বাইনানের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কুতুবউদ্দিন মল্লিক ও বাইনানের এর যুব তৃণমূল সভাপতি দেবাশীষ রানা। এ ছাড়া জয়নাল মল্লিক ও শেখ সাহিদ নামে দু’জনকেও আজ ভোরে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলার স্বামীর দাবি, পাশের একটি নির্ণীয়মান বাড়িতে রাত হলেই চলে মদ-গাঁজার ঠেক। এলাকার নানা ধরনের দুষ্কৃতীমূলক কাজ কর্ম সেখান থেকে চলে বলেই তাঁর দাবি। তবে এলাকার বাসিন্দারা ভয়ে মুখ খুলছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
34 year old wife of a BJP worker tied and brutally gangraped by TMC workers led by Kutubuddin Mallik and others in Bengal’s Bagnan.
Local police initially refused to even file her complaint and wanted to dilute the case.
TMC is using rape as a political tool to silence opponents. pic.twitter.com/pcr471ygyt— Amit Malviya (@amitmalviya) August 9, 2021
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই টুইট করেছেন বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। অভিযোগপত্র টুইট করে অমিত মালব্য জানিয়েছেন, এই ঘটনায় প্রথমে পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি, অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তাঁর দাবি, তৃণমূল ধর্ষণকেই বিরোধীদের চুপ করানোর অস্ত্ হিসেবে ব্যবহার রতে চাইছে। ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতা রাহুল সিনহাও। তিনি বলেন, ‘একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পশ্চিমবঙ্গ মহিলা অত্যাচারে এক নম্বর। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের অত্যাচারের পর বলেন দুষ্টু ছেলেদের কাজ। তিনি কেমন দুষ্টু ছেলেদের পুষেছেন, তারই প্রমাণ এই ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। ধর্ষকদের হাতেই এখন রাজ্যের ভাগ্য।’ মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি বিবৃতি দিতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃনমূল নেতা তথা মন্ত্রী অরূপ রায়, ‘বিজেপির মুখে এই সব কথা শোভা পায় না। আগে অপরাধীদের আড়াল করা হত। এখন গ্রেফতার করা হয়েছে। দোষীরা শাস্তি পারে।’ আরও পড়ুন: আইন শৃঙ্খলা, জাল টিকা ইস্যুতে বিজেপির প্রতিবাদ, আজ থেকে ৮ দিনের ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও’ কর্মসূচি