Gopal Dalapati: হাওড়ার বুকে গোপালের কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ! TV9 বাংলার হাতে সরকারি নথিও
Gopal Dalapati: নথি বলছে, অজয় নাগ নামে এক প্রোমোটারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জমি নিয়ে গোপালের চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। এর মাঝেই আবার চিত্রনাট্যে জনৈক অমিত আগরওয়ালের প্রবেশ।
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Scam) আতস কাচের তলায় গোপাল দলপতি (Gopal Dalapati)। সেই গোপাল ওরফে আরমান গঙ্গোপাধ্যায়ের কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পেল টিভি নাইন বাংলা। একেবারে নথি-সহ সব বিস্ফোরক তথ্য। হাওড়ায় গোপাল দলপতির সেই জমির মূল্য প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা! ওই জমিতে বহুতল নির্মাণের জন্য চুক্তি হয়েছে। সেই বাবদ প্রাপ্ত অর্থও কোটির কম নয়। গোপাল দলপতি কি সুবোধ গোপাল? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে কয়েকদিন আগেই TV9 বাংলার প্রতিনিধি পৌঁছে গিয়েছিলেন গোপালের গ্রাম খিরিষবাড়ি। মা লক্ষ্মী দলপতি গ্রামের বাড়ি দেখিয়ে বলেছিলেন, কোটিপতি হলে কি বাড়িতে একটা শৌচাগারও থাকত না? লক্ষ্মী বলেন, “আমি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খাতা খুলে দেখিয়ে দেব। আমি বার্ধক্য ভাতা পাই ১ হাজার টাকা করে, সেই টাকা দিয়ে আমি হাত খরচ করি, পান খাই। আমার পোশাক দেখলেই তো বুঝতে পারবেন। কোটি টাকা থাকলে তো পায়খানা বাথরুমও হয়ে যেত।”
টিভি নাইনের অন্তর্তদন্ত বলছে, লক্ষ্মী দলপতি যা বলছেন তার সঙ্গে রাজ্য অর্থ দফতরের বিভাগীয় নথি মিলছে না। সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০২০ সালের অগস্টে হাওড়া পুরসভায় নিজের মালিকানাধীন ৭ কাঠা জমি মা লক্ষ্মী দলপতির নামে দানপত্র করেছেন গোপাল। সরকারি হিসাবে সেই জমির বাজার মূল্য প্রায় ৮০ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা! তদন্তকারীদের মতে, মায়ের নামে জমি দান ছিল আসলে একটি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ। দ্বিতীয় ধাপ হল ওই জমিতে এক্সপ্রেস ওয়ের ধারে বহুতল নির্মাণ। চুক্তিপত্র অনুযায়ী, জমির ওপর বহুতল হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু জমি জটিলতায় তা এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। অন্যদিকে, সরকারি নথিতে বলছে, যে সময়ে গোপাল দলপতি, তাঁর মা লক্ষ্মী দলপতিকে জমি হস্তান্তর করেন, তখনকার হিসাবে বাজারমূল্য ছিল ৮১ লক্ষ টাকা।
নথি বলছে, অজয় নাগ নামে এক প্রোমোটারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জমি নিয়ে গোপালের চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। এর মাঝেই আবার চিত্রনাট্যে জনৈক অমিত আগরওয়ালের প্রবেশ। অমিতের দাবি, জমির আসল মালিক তিনি। সেই থেকে জটিলতার কারণে থমকে ওই জমিতে বহুতলের কাজ। অগ্রিম বাবদ গোপাল দলপতির পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন অজয়। তা ফেরৎ পাননি বলে অভিযোগ অজয়ের।
অজয় বলেন, “রেজিস্ট্রি করিনি আমরা। যখন এখানে আমরা আসি, দেখি অমিত আগরওয়াল বোর্ড লাগিয়ে বসে আছে। জায়গায় তাঁর বলে দাবি করছেন অমিত আগরওয়াল। তারপর আমি গোপাল দলপতিকে বলি বিষয়টা। ওঁ বললেন, আমি সব ঠিকঠাক করে দেব। তারপর তো আজ ৩ বছর হতে চলল। তারপর থেকে এখানে আসেন না, দেখাও করেননি। আমরা দুজন পার্টনার মিলে ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। কাগজে লেখা ছিল লক্ষ্মী দলপতির জায়গা।”
অর্থ দফতরের অন্তর্গত ডিরেক্টরেট অব রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড ল্যান্ড রেভিনিউর নথি বলছে, হাওড়ার জগাছার সংশ্লিষ্ট জমির মালিক গোপাল দলপতি। তিনি মা লক্ষ্মী দলপতির নামে সেই জমির মালিকানা হস্তান্তর করেছেন। তাহলে জমির মালিকানায় বিতর্ক কেন? জমির মালিক যদি গোপাল দলপতিই হন, তাহলে প্রায় কোটি টাকার জমির মালিক তিনি কীভাবে হলেন? এই টাকার উৎস কী? গোপালের আসল সম্পত্তি কত?
রবিবারই আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে TV9 বাংলার হাতে। সূত্রের দাবি, গোপালের মডেল অভিনেত্রী স্ত্রী হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। যদিও TV9 বাংলার প্রতিনিধির কাছেই গোপাল দাবি করেছেন, “হাজার হাজার কোটি টাকা তো দূরের কথা। কোনও সম্পত্তি গোপাল দলপতি ও হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে আছে, সেটা দেখিয়ে দিক কেউ। ওই হাজারটা শুধু জিরো হয়ে যাবে না তো। একটা বাদ দিলে আর বাকি তো সব জিরো জিরো…এটা খুব তাড়াতাড়ি প্রমাণ হবে।”