হাওড়া : বর্ধমান-কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বিষমদ-কাণ্ডের ছায়া রাজ্যে! হাওড়ায় একই এলাকায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় উত্তেজনা। মদ খাওয়ার পরই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের। বুধবার সকালেই অন্তত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর। স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অন্তত ৪০ জন। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে মালিপাঁচঘরা থানার পুলিশ।
হাওড়ার মালিপাঁচঘরা থানা এলাকার ঘুসুড়ির গজানন বস্তির ঘটনা। এলাকায় রেল লাইনের ধারে থাকা বস্তিতে প্রতিনিয়ত এই মদ বিক্রি করা হতে বলে দাবি বাসিন্দাদের। ছিল একাধিক মদের ঠেক। ঘটনায় প্রতাপ কর্মকার নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বস্তির লোকজনের দাবি, ওই ব্যক্তিই মদ বিক্রির মূল পাণ্ডা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মদ খাওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। মৃতদের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, মদ খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বেশ কয়েকজন। মৃতের সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় বুধবার সকালে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, দিনের পর দিন এই মদ বিক্রি চলছিল, সব জেনেও চুপ করে ছিল পুলিশ।
এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘অনেকবার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পুলিশ এসে রেড করত। তারপরও চলত মদের ঠেক। অন্তত ৪০ বছর ধরে এই কারবার চলছিল বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।’ এ দিন সকালে মৃত্যুুর ঘটনার পর এলাকার মানুষজন গিয়ে মদের ঠেক ভেঙে দেন। তাঁদের দাবি, পুলিশ তৎপর হলে এতগুলি মৃত্যুর ঘটনা আটকানো যেত। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সেগুলি বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। মূল অভিযুক্ত প্রতাপের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
বর্ধমানের পর এবার হাওড়ায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায়, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আঙুল তুলছেন বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘দুয়ারে মদ প্রকল্প চলছে। পুলিশ এর সঙ্গে যুক্ত।’ তাঁর অভিযোগ, পুলিশ ওই সব মদের ঠেক থেকে টাকা তোলে। কয়লা পাচার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবার এই সব চলছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সম্প্রতি একই ঘটনা ঘটে বর্ধমানে। বর্ধমানের কলেজমোড় এলাকার একটি হোটেল থেকে মদ কিনেছিলেন বেশ কয়েকজন। সেই মদ খেয়েই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮।