Prasun Banerjee: জোরে বাজছে হিন্দি গান, সঙ্গে কোমর দোলাচ্ছেন মহিলারা, তৃণমূল সাংসদের উল্লাসে অতিষ্ঠ মাধ্যমিক পড়ুয়ারা
Howrah: অভিযোগ, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য যখন বাড়ি-বাড়ি পড়ুয়ারা প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সেই সময় বড়-বড় বক্স বাজিয়ে বসন্ত উৎসবে মেতে উঠলেন তৃণমূল সাংসদ।
হাওড়া: শুরু হয়েছে মাধ্যমিক। ইতিমধ্যে কয়েকটি পরীক্ষাও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাকি পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত পরীক্ষার্থীরা। তবে এর মধ্যেই বিতর্কিত কাজ করে নাম জড়ালেন হাওড়া জেলা সদরের তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য যখন বাড়ি-বাড়ি পড়ুয়ারা প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সেই সময় বড়-বড় বক্স বাজিয়ে বসন্ত উৎসবে মেতে উঠলেন তৃণমূল সাংসদ। শুক্রবার রাতের এই অনুষ্ঠানের গান ও উদ্দাম নৃত্যের ছবি ভাইরাল হতেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পড়ুয়াদের অভিভাবকরা সাফ-সাফ জানিয়েছেন, এই সকল অনুষ্ঠানের জন্য তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে।
সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যে সাতটা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত বসন্ত উৎসব উপলক্ষে জলসা হয় হাওড়ার সুরকিকল এলাকায়। হাওড়া সদরের তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে এই জলসার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় মহিলাদের নিয়ে এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন স্বয়ং সাংসদ। সন্ধ্যের পর বড়-বড় বক্স বাজিয়ে একের পর এক হিন্দি সিনেমার গানের সঙ্গে নাচতে থাকেন শিল্পীরা। স্থানীয় মহিলারাও গানের তালে-তালে কোমর দোলান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ নিজে। অথচ ওই এলাকায় একাধিক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সেই সময় পড়াশোনায় ব্যস্ত ছিল। তাঁদের অভিভাবকরা জানিয়েছেন, শনিবার জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষার প্রস্তুতিতে তাঁদের অসুবিধা হয়েছে। শেষমেষ দরজা-জানলা বন্ধ করে কোনও রকমে বাচ্চারা পড়াশোনা করেছে।
এদিকে, গোটা ঘটনা নিয়ে আসরে নেমেছে বিরোধীরা। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সাংসদের এই আচরণ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে। বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, চটুল গানের সঙ্গে উদ্দাম নাচ। আর জোরে-জোরে গান বাজানোর ফলে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি হয়েছে। পুলিশ এবং প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাংসদ যেভাবে অনুষ্ঠান করেছেন তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশ তৃণমূলের দলদাস হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁরা কোনও বাধা দেয়নি। অন্যদিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বলেন, “পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে সাংসদের বক্স বাজানো উচিত হয়নি। এতে তাদের ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষার সময মাইক বাজানো নিয়ে প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে চলা উচিত ছিল। যারা আইনের রক্ষক তারাই আইন ভাঙছেন।”
এদিকে, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও গোটা ঘটনাটি ভাল চোখে দেখা হয়নি। সাংসদের এহেন আচরণের কঠোর সমালোচনা করে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক শ্যামল মিত্র বলেন, “প্রশাসনের নির্দেশ আছে পরীক্ষার সময় মাইক না বাজানো। তা সত্ত্বেও সাংসদ যেভাবে কাজটা করেছেন সেটা করা ঠিক হয়নি। সরকার বা দল কখনো এই ধরনের কাজকে সমর্থন করে না।” সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঠিক বাড়ির সামনে এই অনুষ্ঠান হয়নি। একটু দূরেই হয়েছে। এর আগেও অনুষ্ঠান করেছে ওরা। আমার বাইরে যাওয়ার কথা। সেই কারণে ওরা আগেভাগেই অনুষ্ঠান করেছে। ওই এলাকায় একটি ক্লাব রয়েছে। সেই ক্লাবের মধ্যেই ওরা করে এইসব। যদিও, আওয়াজ বাইরে যায়নি একদম। গানের মধ্যে বাংলা গান, রবীন্দ্রনাথের গান গেয়েছে শুধু।”
আরও পড়ুন: jalpaiguri Crime: যেন সিনেমা, বৃদ্ধার সঙ্গে লুকোচুরি খেলে মাত্র ৬ মিনিটেই সব ‘হাফিস’ করল চোর