‘আমি বেসুরো নই, লক্ষ্মী-রাজীবকেও বলেছি মমতার সঙ্গে থেকেই লড়তে হবে’, সুর নরম প্রসূনের
প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, "আমি কখনওই বেসুরো ছিলাম না। আমার মনে হল, তৃণমূল সাংসদ হিসাবে এতগুলো বছর আমি যে হাওড়ায় আছি আমার কাছে খবরাখবর যায় না।"
কলকাতা: শতাব্দী রায়ের পর এবার ‘অভিমান’ ভাঙল প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গত কয়েকদিন ধরে তাঁকে ঘিরে যাবতীয় জল্পনার আপাতত ইতি টানলেন হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ। বললেন, “আমি বেসুরো নই, ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।” একইসঙ্গে জানিয়ে দিলেন, আগামী বিধানসভা ভোটে মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
গত ১৩ জানুয়ারি হাওড়ায় ভরা জনসভায় প্রথম বোমাটি ফাটান বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তাঁর দাবি ছিল, “বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।” হাওড়ার সাংসদ অবশ্য সেদিনই এই বিতর্কে জল ঢালেন। তবে শুক্রবার রাজ্য রাজনীতির চাকা যখন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়কে কেন্দ্র করেই ঘুরছে, সে সময় প্রসূনের গলায়ও শোনা যায় ‘অভিমানের’ সুর।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কথাই সার, টিকাপ্রাপকের তালিকায় প্রথম নাম তৃণমূল বিধায়কের!
তিনিও জেলা সংগঠনের বিরুদ্ধেই উষ্মা প্রকাশ করেন। জেলায় দলীয় রদবদল হয়ে গেলেও সাংসদের কাছে খবর পৌঁছয় না বলে ‘দুঃখ’ প্রকাশ করেন। তাঁর এই বক্তব্যই নতুন করে ইন্ধন জোগায় জল্পনায়। শনিবার TV9 বাংলাকে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “আমি কখনওই বেসুরো ছিলাম না। আমার মনে হল, তৃণমূল সাংসদ হিসাবে এতগুলো বছর আমি যে হাওড়ায় আছি আমার কাছে খবরাখবর যায় না। তবে এটা আমি বলতেও চাইনি। উল্টে আমি বলব, সকলে ফিরে আসুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থেকে লড়াই করতে হবে।”
সূত্রের খবর, প্রসূনের শুক্রবারের বক্তব্য নিয়ে রাতেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন দলের অপর বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। বেশ কিছুক্ষণ দু’জনের কথা হয়। তখনই অনেকটা সুর নরম হয় প্রসূনের। এরপরই এদিন বলেন, “ক্ষোভ জানানোর সময় এটা নয়। রাজীব, লক্ষ্মী সবাইকে বলেছি মমতার সঙ্গেই লড়াই করতে হবে। লড়াই জিতে তারপর নেত্রীকে অসুবিধা কোথায় জানাব।”
এদিকে শনিবার বিকেলেই ফেসবুক লাইভ করবেন ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার পর দলবদলের জল্পনা নিয়ে সব থেকে বেশি শিরোনামে এসেছেন যিনি। সূত্রের খবর, তাঁকে দলে ধরে রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে খোদ দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। একাধিকবার পার্থর নাকতলার বাড়িতে গিয়েছেন রাজীব। তবে সেসবে বনমন্ত্রীর ক্ষতে কতটা প্রলেপ পড়ল তা এদিন বিকেলেই বোঝা যাবে। আপাতত প্রসূন, শতাব্দীকে সামলানো গিয়েছে, তাতেই অনেকটা স্বস্তি তৃণমূলের অন্দরে।