হাওড়া : “কোমরে পিস্তল ঝুলিয়ে, তরোয়াল নিয়ে মিছিল। এ কী ধরনের শোভাযাত্রা? আমরা এতদিন ধরে বাংলায় বাস করছি এরকম পরিস্থিতি তো কোনওদিন এটা লক্ষ্য করেনি। রেহাই পাবে না অপরাধীরা। আজ হোক, কাল হোক, ধরা পড়বেই।” হাওড়ায় অশান্তির ঘটনার পরেই এ কথা বলতে শোনা গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhisekh Banerjee)। এদিকে এরইমধ্যে হাওড়ার শিবপুরের (Shibpur Chaos) গোলমালের ঘটনায় এবার বিহার থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। সুমিত শাউ নামে ওই যুবককে বিহারের (Bihar) মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন সঙ্গে অস্ত্র থাকার বিষয়টি জেরায় স্বীকার করে নিয়েছে ধৃত সুমিত। যদিও তাঁর মায়ের দাবি, তাঁর ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। সে নির্দোষ।
প্রসঙ্গত, অস্ত্র হাতে এক যুবকের মিছিলে হাঁটার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও টুইট করেন ওই ছবি। তৃণমূলের বক্তব্য, ওই ভিডিয়ো শিবপুরের মিছিলের। এর প্রেক্ষিতে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর। ভিডিয়োটি ভুয়ো বলে দাবি করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এরইমধ্যে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দাদের হাতে বিহারের মুঙ্গেরে গ্রেপ্তার হন সুমিত। ছেলের গ্রেফতারির খবর পেতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা।
তিনি বলেন, “পড়াশোনা বেশি দূর করেনি ও। মাধ্যমিক দিয়েছিল। পাশ করতে পারেনি। তারপর থেকে আমার ছেলে গাড়ির খালাসির কাজ করত। আমাদের পরিবার খুবই গরিব। রামনবমীর দিন আমাদের ঘরে দুর্গাপুজো হয়। ও নিজেও পুজোয় অংশ নিয়েছিল। বাচ্চাদের খাইয়েছিল। বজরংবলির পুজো করেছিল। তারপর বলল আমি মিছিলে গাড়ি নিয়ে যাব। আমি বারণ করেছিলাম ওকে। আগের বছরের ঝামেলার কথাও বলেছিলাম। ও বলে কিছু হবে না। আমি গাড়িতে থাকব। ওর হাতে কে ওটা দিয়েছে সেটাই তো বুঝতে পারছি না। আমরাও ছিলাম মিছিলে। তবে ওর সঙ্গে ছিলাম না। বিজেপি করত কী করত না জানি না। তবে কেউ বললে টাকা নিয়ে ঝান্ডা লাগিয়ে দিত। সব পার্টিরই লাগাত।”
জানা গিয়েছে, সুমিতের বাড়ি হাওড়ার সালকিয়ায়। আগামীকাল ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে হাওড়ায় আনা হবে বলে জানা যাচ্ছে। সুমিতের মায়ের সাফ দাবি, কিভাবে সুমিতের কাছে অস্ত্র এল তা তিনি জানেন না। তাঁর আরও দাবি, ওটা নকল অস্ত্র। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সবাই তো বলছে ওটা নকল বন্দুক। আমি কী করে জানব ওটা আসল বন্দুক কি না। আমার ছেলে নেশাটেশা কিছুই করে না। না মদ খায় না বিড়ি-সিগারেট খায় না। আমার মনে হয় ছেলেকে কেউ ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।”