হাওড়া: আগের দিনই হঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি থেকে ঘরওয়াপসি করা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Rajib Banerjee)। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Prasun Banerjee) নিশানায় রাজীবের সঙ্গে তৃণমূল ত্যাগ করা আরেক নেতা তথা হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী (Rathin Chakraborty)। তাঁকে অযোগ্য মেয়র বলে আক্রমণের পাশাপাশি দলের কাছে রথীনের জন্য আবেদন করা তাঁর মারাত্মক ভুল ছিল বলে মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ।
সামনেই হাওড়া পুরসভার পঞ্চাশটি ওয়ার্ডের নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, রথীন চক্রবর্তীকে মেয়র করার জন্য দলের কাছে তিনিই অনুমোদন চেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে বুঝতে পারেন তা কত বড় ‘মারাত্মক ভুল’ ছিল। প্রসূনের মন্তব্য, রথীন চক্রবর্তীর মেয়র হওয়ার কোনও যোগ্যতাই আসলে ছিলনা। শুরুর দিকে দু’বছর হাওড়া পুর এলাকায় কিছু কাজ হলেও মেয়াদের শেষ তিন বছর কোনও কাজই হয়নি। উন্নয়ন থমকে গিয়েছিল বলে দাবি হাওড়ার তৃণমূলের সংসদের।
এখানেই থামেননি। বালি মিউনিসিপ্যালিটিকে হাওড়া মিউনিসিপ্যালিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করা হলেও সেভাবে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ বালির মানুষের জন্য হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘অতি প্রাচীন শহর বালির মানুষজন কার্যত অবহেলিত’। প্রসূন আরও দাবি করেছেন, সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে তিনি বালি ও হাওড়া পুর এলাকায় উন্নয়ন করেছিলেন নিজ উদ্যোগে। কিন্তু প্রাক্তন মেয়র উন্নয়নের কাজের জন্য তাঁকে কোনওদিন ডাকেননি বলে অভিযোগ করেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবারের নির্বাচনে হাওড়া পুরসভার পঞ্চাশটি ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়লাভ করবে বলে নিশ্চিত প্রসূন বলেন, নতুন বোর্ড গঠনের পর পুরপ্রতিনিধিদের সাথে উন্নয়নের কাজে যুক্ত হয়ে হাওড়া শহরকে নতুন রূপে তৈরি করবেন। তবে প্রার্থী হিসাবে নতুন, ইয়ং জেনারেশনের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
এদিকে প্রসূনের এহেন আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় প্রাক্তন পুরপিতারা জানিয়েছেন এটা সাংসদের ব্যক্তিগত মতামত। তিনি কেন এরকম বলেছেন, তাঁরা জানেন না। তাঁরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তাই উন্নয়নের কাজে অভিজ্ঞতা অবশ্যই কাজে লাগবে কোথাও বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, রবিবারই প্রকাশ্যে নাম না করে রাজীবকে হাওড়াতে না ঢুকতে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, “কিছু লোক আছে যাঁরা ঠিক নির্বাচনের আগে দল ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই সব লোক হাওড়ায় ঢুকতে পারবে না। হাওড়ায় ঢুকতে দেব না। যত বড়ই মাতব্বর হও। ভেবেছিল দিদি হেরে যাবে। তাই বাড়ি চলে গেল, প্লেনে উড়ে গেল। আবার হেরে গিয়ে ফিরে এসে দিদির ছবি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো। কোনও কারণেই আমি মানতে পারব না। যদি দরকার হয়, দল যদি বলে দল ছেড়ে চলে যান, আমি পদত্যাগ করে মমতাদির পায়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে থাকব।” এবার তাঁর আক্রমণ তৃণমূলত্যাগী রথীন চক্রবর্তীকে।