নদিয়া: দু’দিন আগে ধূমধামের সঙ্গে পালিত হয়েছে স্বাধীনতা দিবস। দীর্ঘ দু’শো বছর ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পায় ভারত। ভেঙে যায় পরাধীনতার শৃঙ্খল। প্রতিবছর সংশ্লিষ্ট এই দিনে বন্ধ থাকে স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে অফিস-আদালত সমস্ত কিছু। তবে জানেন কি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে ১৫ নয়, ১৮ অগস্ট পালিত স্বাধীনতা দিবস। অবাক হবেন না। এটাই বাস্তব। কিন্তু এর পিছনের কারণ জানেন?
ইতিহাস বলছে
১৫ অগস্ট গোটা ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করলেও ম্যাপে কিছুটা ভুলের কারণে পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় নদিয়ার শান্তিপুর, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, কৃষ্ণগঞ্জ সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এই সকল স্থানে ১৫ অগস্ট পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন কিছু মানুষ।
তৎকালীন সময় শান্তিপুরের সন্তান পণ্ডিত লক্ষীকান্ত মৈত্র, কৃষ্ণনগরের রানি জ্যোতির্ময়ী দেবী কাছে বিষয়টি উপস্থাপনা করেন। এরপর তাঁর উদ্যোগে লক্ষীকান্ত মৈত্র জহরলাল নেহেরুর কাছে নদিয়া জেলাকে ভারতবর্ষে অন্তর্ভুক্তি করার আবেদন করেন। তাঁর দাবি ছিল, প্রায় পাঁচ শতাধিক বছর আগে নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও শান্তিপুরে আবির্ভাব ঘটেছিল অদ্বৈত আচার্যের। নদিয়া জেলা জুড়ে রয়েছে প্রচুর মন্দির ওর নদিয়ার নিমায়ের কৃষ্ণ প্রচার রক্ষার্থে এই জেলাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তি না করে ভারতবর্ষের মধ্যে অন্তর্ভুক্তি করা হোক।
এরপর ১৮ অগস্ট নদিয়ার এই বৃহৎ অংশকে ভারতবর্ষের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত করার হয়। ১৯৪৭ সালে শান্তিপুরে প্রথম ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন কবি করুণানিধান বন্দোপাধ্যায়। এরপর থেকে এই দিনটি স্বাধীনতা দিবস পালন করে আসছে নদিয়ার শান্তিপুর এলাকার মানুষজন। সেই মোতাবেক শান্তিপুরে এ দিন পতাকা উত্তোলন করেন শান্তিপুরে বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী।
শুধু নদিয়া নয়, এর পাশাপাশি উত্তরের জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরের সদর বালুরঘাট স্বাধীন হয়েছিল এ দিন। সরকারি ভাবে ১৮ অগস্ট বালুরঘাট স্বাধীন হয়েছে এই ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে দিনটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হয়৷ যদিও দিনটি সরকারি ভাবে এখনো পালন করা হয় না। যা নিয়ে আক্ষেপ রয়েই গেছে বালুরঘাটবাসীর।