জলপাইগুড়ি: রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা করছেন উত্তরবঙ্গে। রবিবার জলপাইগুড়ি দিয়ে যায় সেই যাত্রা। জলপাইগুড়ি পোস্ট অফিস মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রায় ৭০ জন বৃদ্ধ বৃদ্ধা। সকলেই স্থানীয় শানুপাড়ার বাসিন্দা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর কাছে তাঁরা আবেদন জানান, বার্ধক্য ভাতাটা যেন রাজ্য সরকার এবার দিয়ে দেয়। সেই তালিকায় ছিলেন ১০৫ বছর বয়সি ননীবালা রায়। তিনি বলেন, এখন মেয়ে খাওয়ায়। আর কেউ দেখারও নেই। সরকার যদি বার্ধক্যভাতাটুকু দিত, তাতে উপকার হতো। অথচ সেটাও পান না। শুনেছেন রাহুল আসছেন জেলায়। রাজীব গান্ধীর ছেলে বলে কথা, ইন্দিরা গান্ধীর নাতি। শুনেই বাকিদের সঙ্গে শানুপাড়া থেকে পোস্ট অফিস মোড়ে এসে হাজির হন শতায়ু ননীবালা।
জলপাইগুড়ি খরিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের শানু পাড়ার ননীবালা রায়, শিশু রায় সকলেরই এক অভিযোগ, সরকার বার্ধক্য ভাতা দিচ্ছে না। তাঁদের দাবি, দফায় দফায় আবেদন করেছেন। এখনও কোনও জায়গা থেকে সবুজ সঙ্কেত আসেনি। তাই বিষয়টি রাহুল গান্ধীর নজরে আনতে রবিবার বেলা ১২টা থেকে স্থানীয় কংগ্রেস পঞ্চায়েত সদস্যর সঙ্গে জলপাইগুড়ি পোস্ট অফিস মোড়ে এসে হাজির হন। প্রায় তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়েও ছিলেন সেখানে।
ননীবালা রায়ের কথায়, “১০৫ বছর বয়স। আমি বৃদ্ধভাতা পাই না। মেয়ে খাওয়ায়। রাহুল গান্ধীকে সেটাই বলতে এসেছিলাম।” নাম শিশু হলেও শরীর মনে বার্ধক্য থাবা বসিয়েছে। সেই শিশু রায় বলেন, “এতদিন হয়ে গেল বার্ধক্যভাতা পাই না। রাহুল গান্ধীর কাছে আশা যদি দয়া করে বৃদ্ধভাতা করে দেন।”
কিন্তু রাহুল গান্ধীর কাছে আসার কারণ? স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও জেলার কংগ্রেস যুবনেতা গণেশ ঘোষ বলেন, “শানুপাড়ায় ৭০ জন বার্ধক্যভাতা, বিধবা ভাতা থেকে বঞ্চিত। আমরা রাহুল গান্ধীর হাতে এক দাবিপত্র দিলাম। উনি সেটা গ্রহণ করেছেন। আবেদনপত্র দিয়েও এ রাজ্যের সরকার তো দেয়নি। তাই ওনাকে দিলাম। উনি সংসদে এ নিয়ে বলবেন। তাতে হয়ত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সহানুভূতির সঙ্গে এটা দেখবেন। ৮০ বছর, ১০০ বছর বয়স। তাও ভাতা পাচ্ছেন না। এটা তো বেদনাদায়ক।”
যদিও এ নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি সীমা চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তাঁদের জানা নেই। সংবাদমাধ্যমের কাছেই প্রথম শুনলেন। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সমস্যা সমাধান প্রকল্প শুরু হয়েছে। তার মাধ্যমে অবিলম্বে সরকারি সুযোগ তাঁদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি।