জলপাইগুড়ি: চন্দন কাঠ পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু সেই কাঠ প্রতিবেশী দেশে পাচারের জন্য করোনা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে যে অভিনব কৌশল নেওয়া হয়েছিল, তাতে তাজ্জব বন দফতরও। ডুয়ার্সের পুষ্পা গ্যাং-এর সেই ছক হাতেনাতে ধরে ফেলল বন দফতর। ভিন রাজ্য থেকে লাল চন্দন কাঠ এনে মজুত করা হচ্ছিল ডুয়ার্সে। আর সেই কাঠ ভুটানে পাচারের পরিকল্পনা ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুষ্পা গ্যাং-এর দুই সদস্যকে গ্রেফতার করল বন দফতর। তাদের জেরা করে কয়েক কোটি টাকার লাল চন্দন কাঠের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। বন দফতর ধৃতদের সাত দিনের হেফাজতে নিয়েছে।
বন দফতর সূত্রে খবর, মূলত লকডাউনকে কাজে লাগিয়েই মেডিক্যাল ভ্যানে লাল চন্দন কাঠ নিয়ে আসতেন পাচারকারীরা। ভুটানে পাচারের জন্যই সেগুলি ডুয়ার্সে রাখা থাকত। ধৃতদের জেরা করে এই তথ্য পেয়েছেন বন দফতরের আধিকারিকরা। কোথায় রাখা আছে আরও লাল চন্দন কাঠ? সেই হদিশ পাওয়ার জন্য ধৃতদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ডুয়ার্সের তেলিপাড়া থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কয়েক কুইন্টাল লাল চন্দন কাঠ। যার বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা। এক কেজি লাল চন্দন কাঠের দামই বর্তমানে কয়েক হাজার টাকা। গত দুবছর ধরেই নাকি এই পাচারের কারবার ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
বন দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণ ভারত থেকে মেডিক্যাল ভ্যানের করে আনা হত লাল চন্দন কাঠ। ডুয়ার্সে এবং পাশের জেলা কোচবিহারে তা মজুত করা থাকত। এ ভাবেই চলছিল কারবার। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ডুয়ার্সের তেলিপাড়ায় হানা দেয় বন দফতর। তারপরই ফাঁস হয়ে যায় এই কারবার। জানা গিয়েছে, ভুটানের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওই পাচারকারীদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই হাতেনাতে ধরা পড়ে যান তাঁরা।
বন দফতরের আধিকারিকদের অনুমান ডুয়ার্সে এবং আশপাশের এলাকায় এমন অনেক ঘাঁটি আছে, যেখানে এ ভাবে চন্দনকাঠ মজুত করা হয়। নেপাল এবং ভুটানে মূলত পাচার করা হয় সেই কাঠ। এই চক্রে আরও অনেকে জড়িত বলেই মনে করা হচ্ছে। ধৃতদের হেফাজতে নিলে আরও অনেক তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছে বন দফতর। তাই শুক্রবার তাঁরা জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে আবেদন জানালে বিচারক পাচারকারীদের হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন।