জলপাইগুড়ি: বিনা পয়সার ডেঙ্গি পরীক্ষা করতে লাগছে ২৭০০ টাকা। হাসপাতালে দালাল চক্রের হাত ধরে এই কাজ চলছে বলে অভিযোগ। শেষে দালাল চক্রের চাঁইদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিল হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা। এ ঘটনার জেরে তুমুল উত্তেজনা জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কীভাবে চলছিল এই কাজ?
সূত্রের খবর, মিথ্যে কথা বলে রোগীর আত্মীয়দের ভড়কে দিয়ে হাসপাতালেই পরীক্ষা করা যায় এমন সমস্ত ব্লাড টেস্ট সহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালের একাংশ কর্মীদের যোগসাজশে মোটা টাকার বিনিময়ে বাইরের ল্যাবগুলি থেকে করানো হচ্ছিল। অভিযোগ বিনা পয়সার ডেঙ্গি টেস্ট করতে নেওয়া হচ্ছিল ২৭০০ টাকা। এছাড়া যে রিপোর্ট তৈরি হতে প্রায় তিন দিন সময় লাগে তা ছয় ঘন্টার মধ্যে অবৈজ্ঞানিকভাবে মানুষকে দেওয়া হচ্ছিল।
সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারছিলেন গ্রিন জলপাইগুড়ি নামে এক সেচ্ছাসেবী সংস্থা। চক্রের দালালদের ধরতে ওত পেতে বসেছিলেন তাঁরা। অবশেষে আজ হাতেনাতে ধরে তাঁদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা।
ঘটনা প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ ঘোষ নামে এক ল্যাব কর্মী বলেন, “আমি একজন ল্যাব কর্মী। কিছু জানিনা। আমাকে মালিক এখান থেকে রক্ত নিয়ে যেতে বলে। আমি নিয়ে যাই। এর বেশি আমি কিছু জানিনা।” স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক অঙ্কুর দাস বলেন, “আমরা হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীদের মাধ্যমে বেশ কিছুদিন ধরে দালাল চক্র সক্রিয় এই খবর পাচ্ছিলাম। কিন্তু ধরতে পারছিলাম না। অবশেষে আজ হাতেনাতে ধরে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দিলাম।” ঘটনায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের উপ অধ্যক্ষ ডাক্তার কল্যান খান বলেন, “হাসপাতালেই অত্যাধুনিক ল্যাব রয়েছে। যেখানে সমস্ত রকম রক্ত পরীক্ষা ২৪ ঘন্টা ধরে করা হয়। আর হাসপাতালে বহিরাগতদের আসা নিষিদ্ধ। হাসপাতালে সমস্ত পরিষেবা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।”
এদিকে ময়নাগুড়ির বাসিন্দা অঞ্জলি রায় জানান তার স্বামীর জ্বর নিয়ে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি জানতেন না হাসপাতালে বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এদিকে তাঁর স্বামীকে রক্ত পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল চিকিৎসক। তিনি জানান, হাসপাতালের এক কর্মী এসে তাঁকে বলেন এই পরীক্ষা হাসপাতালে হবেনা। তখন তিনি বাইরে থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য খোঁজ করতে থাকেন। তাঁর দাবি, তখনই তাঁর থেকে এক কর্মী ২৭০০ টাকা নেন পরীক্ষা করানোর জন্য। এদিকে সরকারি হাসপাতালে এ ঘটনার খবর চাউর হতেই চাপানউতর বেড়েছে জেলার স্বাস্থ্য মহলে।