AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Durga Pujo 2021: ‘বাড়ির যা অবস্থা বাবাকে তো বলা যায় না’, পুজোর জামা কিনতে তাই কচুশাক বেচতে বসল খুদে

Jalpaiguri: খুদে বলছে, শুধু তো নিজের জামা নয়, এতে বাবাকেও একটু সাহায্য করতে পারবে। সে সব ভেবেই শাক নিয়ে বসেছে ফুটপাতের একপাশে।

Durga Pujo 2021: 'বাড়ির যা অবস্থা বাবাকে তো বলা যায় না', পুজোর জামা কিনতে তাই কচুশাক বেচতে বসল খুদে
পুজোর জামা কিনতে ফুটপাতে সবজি বিক্রি করছে খুদে। নিজস্ব চিত্র
| Edited By: | Updated on: Oct 09, 2021 | 1:00 AM
Share

জলপাইগুড়ি: বন্ধুদের সবারই তো পুজোর জামা হয়েছে। ‘কিন্তু আমার কেন নেই?’ বাড়িতে এই প্রশ্ন তুলতেই বাধোবাধো ঠেকে খুদের। বয়স যত অল্পই হোক, বাড়ির আর্থিক অবস্থা তাকে বুঝদার করে দিয়েছে। এদিকে পুজোর জামা তো তারও চাই। তাই বাবা-মা কে কোনও প্রশ্ন না করে নিজের জামা নিজেই কিনে নিতে ফুটপাতে কচুশাক, সবজি নিয়ে বসে পড়েছে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া রাজদীপ। একগাল হেসে সে বলছে, ‘স্কুল বন্ধ, তাই বাবার দোকানের সামনেই শাক বিক্রি করছি।’

করোনাভাইরাস। একটা ভাইরাসই বদলে দিয়েছে সারা দুনিয়ার হিসেব-নিকেশ। কাজ হারিয়েছে বহু মানুষ। পরিবারের অন্ন সংস্থানে যে যেমন পারছে কাজ বেছে নিচ্ছে। ধূপগুড়ির সঞ্জয় তরফদারের পরিবার যেমন।

ধূপগুড়ি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সঞ্জয় তরফদারের দুই পুত্র সন্তান। একজন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। আর ছোটটি চতুর্থ শ্রেণিতে সদ্য ভর্তি হয়েছে। সামনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। সকলেই নতুন পোশাক কিনতে বাজারে যাচ্ছেন। পুজোর সময় নতুন পোশাক পরে ঠাকুর দেখতে যাবে ছেলের বন্ধুরা। কিন্তু ছেলেদের এবার কিছু কিনে দেবার মতো সামর্থ নেই তাঁর। নিজে চা বিক্রি করেন। এখন বাধ্য হয়ে বড় ছেলেকেও সেই কাজে লাগিয়েছেন। এদিকে ছোট ছেলে পুজোর জামা কিনতে বাবার দোকানের পাশেই বসে পড়েছে শাক-পাতা নিয়ে।

বাবা সঞ্জয় তরফদার ফুটপাতে চা বিক্রি করে সংসার চালান। দুই সন্তান সহ বৃদ্ধ মা বাবা কে নিয়ে সংসার চালানো খুবই কষ্টকর। সেটা ছোট্ট ছেলেটি রোজই দেখছে। তাই জামাকাপড়ের জন্য আবদার করে বাবার ভার বাড়াতে চায়নি সে। নিজের জামা নিজে কিনে নিতে সবজি বিক্রি করতে বসে পড়েছে সে। তার বয়সী পাঁচটা ছেলের যখন পুজোর ছুটিতে আনন্দ করে বেড়ানোর কথা, সে তখন দরদামে ব্যস্ত ক্রেতাদের সঙ্গে। খুদে বলছে, শুধু তো নিজের জামা নয়, এতে বাবাকেও একটু সাহায্য করতে পারবে। সে সব ভেবেই শাক নিয়ে বসেছে ফুটপাতের একপাশে।

একটু ভাঙা গলায় সে বলে, “এখনও নতুন পোশাক বাবা কিনে দেয়নি। স্কুল বন্ধ। তাই স্কুল থেকেও এবার নতুন কাপড় দেয়নি। গত বছর নতুন জামা দিয়েছিল স্কুল থেকে। তাই বাবার দোকানের সামনেই শাক বিক্রি করছি। দাদা বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ করছে।”

খুদের দিদা রেখা তরফদার বলেন, “স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে বাচ্চারা। পড়ার কোনও চাপ নেই। সেই কারণে বাড়িতে পড়তেও বসতে চায় না। ওর বাবা দাদা ফুটপাতে চায়ের দোকান করে। আমিও বাড়িতে থাকি না, তাই একা বাড়িতে থাকতে চায় না। ও বাজারে শাক বিক্রি করতে বসেছে। কী করব, কিছু করার উপায় নেই। সত্যিই নতুন পোশাকও তো ওকে কিনে দিতে পারিনি আমরা।”

আরও পড়ুন: Swapan Debnath: ‘করোনায় বাড়ি বসে বেতন নেন, দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ান না শিক্ষকরা,’ মন্ত্রীর মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক