জলপাইগুড়ি : ‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যয় কথা বলছি। মিটিং থেকে একটু বেরিয়ে আসুন।’ ফোনের এপার থেকে সাংসদের গম্ভীর কন্ঠস্বর শুনে ওপারে শুরু হয় তৎপরতা। আশপাশের আওয়াজের মধ্যেও কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি। এপার থেকে তখন একের পর এর প্রশ্নবাণ, ‘আপনারা এই হাটটাকে নতুন করে তৈরি করেননি কেন? জেলা পরিষদ থেকে কোনও সাহায্য করা হচ্ছে না?’ মঙ্গলবার ধূপগুড়ি যাওয়ার পথে জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে ফোন করে এই ভাষাতেই ধমক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়। এ দিন সভায় যাওয়ার পথে আচমকা গাড়ি থেকে নেমে পড়েন তিনি। দোমহনি হাট পরিদর্শন করেন। ব্যবসায়ীদের অভাব-অভিযোগ শুনে সেখানে দাঁড়িয়ে ফোন করেন সভাধিপতি উত্তরা বর্মণকে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই। তার আগে উত্তরের জেলায় অভিষেকের এই সফর রাজনৈতিকভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হয়। এ দিন সভায় যাওয়ার পথেই দোমহনি হাটে নেমে পড়েন তিনি। হাটের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন অভিষেক। এরপর তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে দীর্ঘক্ষণ ধরে অভিযোগগুলো গুরুত্ব সহকারে শোনেন। তারপর নিজের মোবাইল থেকে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মণকে ফোনে ধমক দেন তিনি। দেড় মাসের মধ্যে হাটের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। স্পষ্ট জানান, দেড় মাস পর ফের পরিদর্শনে আসবেন তিনি।
এ দিন অভিষেককে কাছে পেয়ে অনেকেই দোমহনি বাজার ও হাটের অর্ধসমাপ্ত কাজের ব্যাপারে অভিযোগ জানান। এরপরই ফোন করে অভিষেক একের পর এক প্রশ্ন করেন। অভিষেক জানান, বাম আমলে কর্মতীর্থ তৈরি হওয়ার সময় হাটের পরিকাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সেই হাটের অবস্থা এখন বেহাল। জেলা জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘ব্যবসায়ী সমিতি থেকে জেলা পরিষদে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কেন কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি? কোনও তৎপরতা দেখাননি কেন?’ তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘মানুষ নির্বাচিত করেছে, এটা তো আমাদের কর্তব্য।’
এ দিন অভিষেককে সামনে পেয়ে এলাকার মানুষ আপ্লুত। ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁরা তাঁদের সমস্যার কথা বলেছেন অভিষেককে। এ দিন সভায় গিয়েও ওই ঘটনার কথা উল্লেখ করে জেলা নেতৃত্বকে বার্তা দেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘এইভাবে এলাকায় যান আপনারাও। নিরাপত্তা ছাড়াই যান। মানুষের সঙ্গে কথা বলুন।’ এ দিন দোমহনি কালী মন্দিরে পুজোও দেন তিনি৷