ধূপগুড়ি: মঞ্চে বসে পুজোর উদ্বোধন করছেন রাজ্যের মন্ত্রী। সঙ্গে রয়েছেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। আর সেই সভার জন্য রাস্তায় কার্যত বন্ধ হয়ে গেল গাড়ি চলাচল। আটকে থাকল অ্যাম্বুল্যান্স। হয়রানির শিকার হলেন রোগী ও তাঁর আত্মীয়রা। এমনই অভিযোগ উঠেছে ধূপগুড়িতে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তেজনা তৈরি হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষ। প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকা।
ধূপগুড়ির ব্যস্ততম রাস্তা এই ফালাকাটাগামী জাতীয় সড়ক। শুক্রবার সন্ধ্য়ায় ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠান ছিল সেখানেই। অভিযোগ, সেই রাস্তায় এক মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে আটকে থাকল অ্যাম্বুল্যান্স। আর নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করল পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তায় যখন প্রবল যানজট, অনুষ্ঠান মঞ্চে তখন বসে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। পুলিশ সুপার, ডিএসপি ট্রাফিক, জলপাইগুড়ির ডিএসপি ক্রাইম সহ উচ্চপদস্থ কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। হাজির ছিলেন অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়।
অ্যাম্বুল্যান্সে থাকা রোগীর আত্মীয় আব্দুর রহিম সরকার জানান, অ্যাম্বুল্যান্সে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। প্রায় আধঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে থাকতে হয় তাঁদের। ওই ব্যক্তি বলেন, “এইভাবে উৎসব পালন হয় নাকি? আমরা মুমূর্ষু রোগী নিয়ে যানজটে ফেঁসে রয়েছি, আর রাস্তা আটকে পুজোর উদ্বোধন চলছে। প্রশাসনের এই বিষয়গুলি দেখা উচিত।” অ্যাম্বুল্যান্স চালক সঞ্জীত রায়ও জানান, রোগী নিয়ে আটকে থাকতে হয়েছে তাঁকে। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ নিজেই রাস্তায় বেরিয়ে লাগিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করেছে।
দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থা থাকায় উত্তেজিত জনতা পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে খুব উগরে দেন। এরপর পুলিশ একজনকে থানায় নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এরপরই ধূপগুড়ি মসজিদ মোড়ে শতাধিক যাত্রী একত্রিত হয়ে অবরোধ শুরু করলে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পার্ভিন বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। এইমাত্র এলাম। খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” এই বিষয়ে মন্ত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ঘটনার নিন্দা করেছে বিজেপি। ধূপগুড়ি বিধানসভার কনভেনার চন্দন দত্ত এই প্রসঙ্গে বলেন, “যদি ক্লাবের কর্মকর্তা শাসকদলের নেতা হন, তাহলে এই সমস্ত ঘটনা স্বাভাবিক। সেই কারণেই তো জাতীয় সড়ক আটকে পূজার উদ্বোধন অনুষ্ঠান হল। আর তার খেসারত দিতে হল রোগী এবং সাধারণ মানুষকে।”