জলপাইগুড়ি: ফের পরকীয়া (Extra Marital) -র অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা। প্রেমিককে দড়িতে বেঁধে করা হল বেধড়ক মারধর (Mass Beating)। তার পর ধারাল অস্ত্রের কোপ বসানো হল তাঁর মাথা থেকে গায়ে! ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়াল ধূপগুড়ির (Dhupguri) ভেমটিয়া এলাকায়। ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ধূপগুড়িতে পরপর দুটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটল। বারবার নিজেদের হাতে আইন নিজের তুলে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে।
জানা গিয়েছে, মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা শ্যামল হালদার শিলিগুড়ির বাসিন্দা। বেশ কিছুদিন ধরে বিশাখা মালোদাস নামে এক মহিলার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। এদিন বিবাহিতা বিশাখা মালোদাস তাঁর বাপের বাড়ি ধূপগুড়ির ভেমটিয়া এলাকায় আসে। জানা গিয়েছে বিশাখা ফোন করে শ্যামল হালদার নামে তাঁর প্রেমিককে ফোন করে তাঁকে বাড়ি আসতে বলে। কিন্তু শ্যামল তাঁদের বাড়ি আসতেই বিপত্তি। তাঁকে ঘিরে ধরে পাড়াপ্রতিবেশীরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয় শ্যামলকে। তার পর চলে এলোপাথাড়ি মারধর। এমনকি যুবক বাধা দিতে গেলে অস্ত্রের কোপ এসে পড়ে তাঁর মাথায়। তাঁর মোবাইল ফোনও কেড়ে নিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
এদিকে মারধরের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছেও। খবর পাওয়া মাত্র তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। তারা যখন যায়, তখনও বাঁধা অবস্থায় মারধরে কাহিল হয়ে পড়ে রয়েছেন ওই যুবক। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে রেফার করা হয় গুরুতর আহত ওই যুবককে।
আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ঘটনা প্রসঙ্গে শ্যামল হালদার নিজে বলেন,”আমার সঙ্গে ওঁর সম্পর্ক আছে। ও আমাকে ফোন করে আসতে বলে বাড়িতে। এর পর আমি আসতেই ওঁর স্বামী, বাবা মিলে আমাকে মারধর করে। ইট, পাথর, কাঠ এমনকী ছুরি নিয়ে আঘাত করে। মোবাইলে সব প্রমাণ আছে, কে আমাকে আসতে বলেছে।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন বিশাখা মালোদাস। তাঁর দাবি, “আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। ও আমাকে হুমকি দিয়েছে যে আমার দুই বাচ্চাকে মেরে ফেলবে যদি আমি ওর সঙ্গে সম্পর্ক না রাখি।”
যদিও শ্যামল হালদারকে ডেকে আনার ঘটনা স্বীকার করেছেন বিশাখার স্বামী রাজকুমার বর্মন। তিনি বলেন, “আমিই ফোন করতে বলেছিলাম বউকে। আগে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু সে বোঝেনি।”
এদিকে বারবার গণপিটুনির ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। বারংবার আইন নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে মানুষ। রীতিমতো দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা. ধারাল অস্ত্র দিয়ে এভাবে আঘাত করায় বড় অঘটন ঘটার আশঙ্কা ছিল। যদিও ধূপগুড়ির ভেমটিয়া এলাকার এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Murder: স্ত্রী’কে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন, তারপর সোজা থানায় হাজির স্বামী