জলপাইগুড়ি: ইডি দফতরে নালিশ ঠুকতেই সেচ্ছাসেবী সংস্থাকে চাপে রাখতে সক্রিয় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এমনই অভিযোগ সেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার অঙ্কুর দাসের। গ্রিন জলপাইগুড়ি সেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতর যে অভিযোগ এনেছিল তার জবাবে স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে স্মারকলিপি দিলেন অঙ্কুর। সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে মায়ের মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন ছেলে। সেই ছেলের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন অঙ্কুর। তারপর সেই অঙ্কুরকেই গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি কলকাতায় এসে ইডি দফতরে ১৩ পাতার অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে।
গত ১৯ জানুয়ারি সেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রিন জলপাইগুড়ির বিরুদ্ধে একটি অর্ডার জারি করে জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। যদিও গ্রিন জলপাইগুড়ি সেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে জানানো হয়ে সেই অর্ডার কপি তারা হাতে পেয়েছেন গত ২ ফেব্রুয়ারি।
সেই অর্ডার কপিতে জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক অসীম হালদার লিখেছেন, গ্রিন জলপাইগুড়ি নামক একটি সেচ্ছাসেবী সংস্থা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি না নিয়ে ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট আইনের তোয়াক্কা না করে স্বল্প মূল্যে ইসিজি এবং রক্ত পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞাপন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয় ও পরে পরিষেবা গুলি দিয়ে যাচ্ছে, যা আইন বিরুদ্ধ।
এই ব্যাপারে উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ত্রিদীপ দাসকে তদন্ত করে ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। একইসঙ্গে এই অর্ডারের কপি স্বাস্থ্য ভবন, জেলাশক সহ অন্যান্য দফতরে পাঠানোর পাশাপাশি একটি কপি গ্রিন জলপাইগুড়িকেও দেওয়া হয়। সোমবার দুপুরে সংস্থার সদস্যদের নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে এসে তার উত্তর দিয়ে যান গ্রিন জলপাইগুড়ি সংস্থার সম্পাদক অঙ্কুর দাস।
সংস্থার সম্পাদক অঙ্কুর দাসের অভিযোগ, তাঁরা আদতে ইসিজি ও রক্ত পরীক্ষার মতো পরিষেবা দেননা। কোনও দুস্থ মানুষ যখন তাঁদের কাছে এই জাতীয় পরিষেবা চান, তখন তাঁরা শহরের কিছু ল্যাবরেটরিতে পরিষেবা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। প্রয়োজনে তার খরচ গ্রিন জলপাইগুড়ি বহন করে। অঙ্কুর দাসের আরও অভিযোগ যেহেতু গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি কলকাতায় ইডি দফতরে গিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার বিরুদ্ধে ১৩ পাতার নালিশ ঠুকেছেন, তাই জেলা স্বাস্থ্য দফতর তাঁর মুখ বন্ধ করতে এই জাতীয় অভিযোগ তুলেছেন।
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, তিন বছর আগে তিনি ও তাঁর সংস্থার বেশ কিছু সদস্য জেলা হাসপাতাল এবং এক চক্ষু বিশেষজ্ঞর কাজকর্ম সম্ভন্দে কিছু তথ্য জানতে আর টি আই করেছিলেন। ৩ বছর পার হয়ে গেলেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি। যদি স্বাস্থ্য দপ্তর আগামী ১২ তারিখের মধ্যে আর টি আই এর উত্তর না দেয় তবে তারা হাই কোর্টের দারস্থ হবে।
ঘটনায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার জানিয়েছেন তাঁরা একটি বিজ্ঞপ্তি দেখে গ্রিন জলপাইগুড়ি সেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিষয়টি, পাশাপাশি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। গ্রিন জলপাইগুড়ি উত্তর দিয়ে গিয়েছে। এবার স্বাস্থ্য আধিকারিকের রিপোর্ট পেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, যে সময়ের আরটিআই করা হয়েছিল সেই সময় তিনি দায়িত্বে ছিলেন না। তাই তিনি কিছু জানেন না।