জলপাইগুড়ি: জ্বর-শ্বাসকষ্টর মাঝে এক শিশুর কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবর পাওয়া গেল। তবে কি প্রবেশ করতে শুরু করেছে তৃতীয় ঢেউ? এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত শিশু ও জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের কিশোরীর মায়েদের শরীরে সংক্রমণের হদিস মিলেছিল। তাদের আজ জলপাইগুড়ি থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে শিশুদের মধ্যে ভাইরাল জ্বর শুরুর গোড়ার দিকে অর্থাৎ দিন আটেক আগে এক শিশুর দেহে করোনা সংক্রমণের খবর দিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ফের নতুন করে আরও এক শিশুর দেহে করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়ায় এই সংখ্যা বেড়ে দাড়ালো দুই।
এদিকে, রবিবারই মালদা ও শিলিগুড়িতে ফের শিশমৃত্যু হয়েছে। মানিকচকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ৬ মাসের শিশুর। এই নিয়ে মালদায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মোট ৭ শিশুর। মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেডের অভাব। এক-একটি বেডে তিন জন করে শিশুর চিকিত্সা চলছে। এই নিয়ে চার জেলায় মোট ১৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরও ৮টি শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। জানা যাচ্ছে, জ্বরের পাশাপাশি তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে শিশুদের মধ্যে। বেশিরভাগ শিশুই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বলে চিকিৎসকরা বলছেন। আর কিছুক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে এমআইএস-এর লক্ষ্মণ। এক্ষেত্রে যেটা সবচেয়ে বেশি জরুরি, সেটা হল তাদেরকে নতুন করে করোনা টেস্ট করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাঁচ বছরের বয়সের কম শিশুদের মধ্যে এই লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, এটা আরএস ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে। আরএস ভাইরাসের দাপট সারা বিশ্বে জুলাইয়ে দেখা গিয়েছিল। সময়ের অনেক আগেই এই ভাইরাস থাবা বসিয়েছে। শীতকালে যে ভাইরাস হানার কথা, তা দুমাস আগেই অগাস্ট-সেপ্টেম্বরেই দেখা গিয়েছে।
এদিকে, করোনা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মুখে কুলুপ এটেছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। সংবাদমাধ্যমের সামনে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ তারা।
সাংবাদিকদের তরফে একাধিক প্রশ্ন করা হয় হাসপাতাল সুপারকে। এই মুহুর্তে জেলার হাসপাতালের পরিস্থিতি কীরকম?কতজন শিশু ভর্তি রয়েছে?তাদের শারীরিক অবস্থা কেমন ইত্যাদি। কিন্ত প্রতিটি প্রশ্নই এড়িয়ে যান হাসপাতাল সুপার ডাক্তার গয়ারাম নস্কর। তিনি প্রথমে বলেন, “কেউ নেই।” পরে বলেন, “আমি জানিনা। যা জানাবার তা জানাবেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।”অথচ এতদিন ধরে হাসপাতাল সংক্রান্ত যে কোনও খবর সম্পর্কে হাসপাতাল সুপার প্রতিক্রিয়া দিতেন।
অপরদিকে, স্বাস্থ্য দপ্তরের করোনা সংক্রান্ত গত ১৮ সেপ্টেম্বরের বুলেটিনে জানা গেছে জলপাইগুড়ি জেলায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ২৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।
আরও পড়ুন: Pfizer Covid Vaccine: ৫ থেকে ১১ বছরের শিশুদের দেহে নিরাপদ করোনা টিকা! বিরাট সুখবর দিল ফাইজ়ার