জলপাইগুড়ি: হড়পা বান আসার সময় নদীর ঘাটে ছিলেন সিভিল ডিফেন্সের মাত্র আটজন কর্মী। আর নদীর ঘাটে ছিলেন হাজার খানেক মানুষ। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরাই। তাঁদের বক্তব্য, হাতে দড়ি ছাড়া বিপর্যয় মোকাবিলার কোনও সরঞ্জামই ছিল না। কর্মীদের বক্তব্য, তাঁদের কাছে উদ্ধারকার্যের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল কেবল দড়ি। কোনও সার্চ লাইটও ছিল না। তা ছিল নিকটবর্তী অফিসে। সেখান থেকে সার্চ লাইট যতক্ষণে আনা হয়, ততক্ষণে ব্যাহত হয় উদ্ধারকার্য। এই বিষয়টি অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন ওই ঘাটের কর্তব্যরত এনডিআরএফ কর্তাও। তাঁর নিরুত্তাপ ব্যাখ্যা, “উদ্ধারকাজ সময়েই শুরু হয়েছে। আমাদের কাছেই অফিস। সেখান থেকে সার্চ লাইট নিয়ে আসা হয়েছে।” দুর্ঘটনার সময়ে তিনি যে ঘাটে ছিলেন না, সেটাও অবশ্য নিজ মুখে স্বীকার করেছেন।
হড়পা বানের দুর্ঘটনায় প্রথম থেকেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক গাফিলতির অভিযোগ উঠে আসছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও অফিযোগ, কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল প্রশাসন। এমনই এক প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এক চা বাগানের ম্যানেজার। তাঁর দাবি, ভেসে যাওয়া লোকজনকে উদ্ধার করতে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর চা বাগানের শ্রমিকরাও উদ্ধারকার্যে হাত লাগান। প্রাথমিকভাবে প্রথমে তিনি প্রশাসনের কাউকেই দেখতে পাননি। পুলিশ, প্রশাসনের কাউকেই উদ্ধার কাজে নামতে দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ হড়পা বান আসে মাল নদীতে। সূত্রের খবর, সে সময় ঘাটে ছিলেন হাজার খানেক মানুষ। এত ভিড় সামাল দিতে কেন উদাসীন ছিল প্রশাসন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর অবশ্য বক্তব্য, ” এটা একটা দুর্ঘটনা। হাঁটু সমান জল পাঁচ মিনিটে বেড়ে গিয়েছে। ওখানকার আবহাওয়া দেখেও বোঝা যায়নি। বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল, কিন্তু আকাশে মেঘ ছিল না। পুরো ব্যাপারটাই হয়েছে পাহাড়ে। সেখান থেকে জল নেমে এসেছে। হঠাৎ করে হয়েছে। হড়পা বান এমন একটা বান, যেটা হলে বোঝা যায়, আগে বোঝা যায়নি। যার যা কর্তব্য ছিল, সেটা পালন করা উচিত ছিল।”