জলপাইগুড়ি: সিকিমে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যার জেরে মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। ভেসে গিয়েছেন অনেকে। এখনও তাঁদের অনেকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। জোরকদমে তল্লাশি চালাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। এরইমধ্যে বিগত কয়েকদিনে তিস্তার দুই পাড় থেকে অনেক দেহ উদ্ধারের ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় শুক্রবার পর্যন্ত তিস্তা নদী থেকে ২৭ টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র ৭ টি দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। বাকি দেহগুলি শনাক্ত করার কাজ চলছে। মৃতদেহ স্তূপে পরিবারের নিখোঁজ প্রিয়জন আছে কিনা তা দেখতে জলপাইগুড়ি মর্গে ছুটে আসছেন অনেকেই। তেমনই এক হৃদয়বিদারক ছবি দেখা গেল এদিন। চোখে জল নিয়ে নিখোঁজ ভাইকে খুঁজতে মর্গে বেওয়ারিশ লাশ হাতড়ে বেড়াচ্ছেন দাদা।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের গড়াল বাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের কোন পাকুড়ি গ্রামের ডাঙা পাড়ায় থাকেন বছর ২৫ এর জুয়েল ইসলাম। প্রায় দু বছর ধরে সিকিমে ভারতীয় সেনা ছাউনিতে পণ্য বাহকের (পোর্টার) কাজ করেন তিনি। সম্প্রতি ছুটি কাটাতে বাড়ি এসেছিলেন। এর মধ্যেই তাঁর বিয়ের পাকা কথাও হয়ে যায়। ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় গত ৩ তারিখ তিনি ফের সিকিমে গিয়ে কাজে যোগ দেন। ওইদিন সন্ধ্যা নাগাদ কথাও হয় পরিবারের সঙ্গে। এরপর রাতে হয় ভয়াবহ বন্যা। তারপর থেকে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি জুয়েলের সঙ্গে। এমনটাই জানাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। থানাতেও হয়েছে নিখোঁজ ডায়েরি। এরইমধ্যে জলপাইগুড়ি মর্গে ভাইয়ের দেহ খুঁজতে দেখা গেল দাদা মহম্মদ সাদ্দামকে।
মর্গ থেকে বেরিয়ে জুয়েলের দাদা মহম্মদ সাদ্দাম বলেন, বন্যার খবর পাওয়ার পর থেকে আমরা ভাইয়ের সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু কোনও যোগাযোগ হয়নি। গতকাল রাতে আমরা থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত ডায়েরি করেছি। আজ উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতপরিচয় দেহ গুলি দেখতে মর্গে এলাম। একের পর এক দেহ দেখলাম। কিন্তু দেহের মুখগুলি চেনা যাচ্ছে না।