জলপাইগুড়ি: গত বছর বিসর্জনের রাতে মাল নদীর হড়পা বানে জলের স্রোতে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৮ জনের। সেই ঘটনার ভয়ঙ্কর স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি মালবাজারের মানুষ। ছাপ রয়ে গিয়েছে প্রশাসনিক কর্তাদের মনেও। ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে করা সতর্কতা জারি করা হয় ডুয়ার্সজুড়ে একাধিক নদীতে। বিশেষ করে পাহাড়ি খরস্রোতা নদীগুলিতে মানুষের নামার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রশাসন।
বছর ঘুরে একদিন বাদেই আরেকটি বিসর্জন। তাই বিসর্জনের আগে সতর্ক প্রশাসন। গত বছরের দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মালবাজারের মাল নদীতে প্রশাসনের তরফে নিরঞ্জন ঘিরে কড়াকড়ি করা হয়েছে এবার। নিরঞ্জনের জন্য নামতে দেওয়া হবে না কোন পুজো উদ্যোক্তা এবং দর্শনার্থীদের। ঠাকুর ভাসানের যাবতীয় দায়িত্বে থাকবে প্রশাসনের লোকজন এবং মাল পৌরসভার কর্মীদের উপর।
ইতিমধ্যে মাল নদীতে তড়িঘড়ি ঘাট তৈরির কাজ চলছে। বোল্ডার দিয়ে নদীর পাড় বাঁধানোর কাজও চলছে। কংক্রিট ও লোহার তৈরি গ্রিল লাগানো হয়েছে। প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় যাতে কোনওভাবেই নদীতে নামতে না পারেন দর্শনার্থীরা, এমনকী পুজো উদ্যোক্তারাও, সে বিষয়টিতে সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, ভাসানের জন্য নদীতে না নেমে হাইড্রলার জেসিবি মেশিন ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যেই পুলিশ প্রশাসনের তরফে একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠক করা হয়েছে পুজো উদ্যোক্তা ও এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে। উদ্দেশ্য একটাই, মালবাজারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়।
পুজো উদ্যোক্তারাও ওই ভয়াবহ ঘটনার স্মৃতি ভুলতে পারেননি। তাই সতর্ক রয়েছেন তাঁরাও। নিরঞ্জনের দিন নদীতে যাতে কেউ না নামেন সেই বার্তাও দিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত প্রশাসনিক তৎপরতা কতটা কার্যকরী হয়। নদী থেকে উৎসাহী মানুষ ও দর্শনার্থীদের কতটা দূরে রাখতে সক্ষম হন পুলিশ এবং প্রশাসন, সেদিকে নজর রয়েছে সকলের।