জলপাইগুড়ি: সারা দিনের কাজের মধ্যে বেশ খিদে রেয়ে গিয়েছিল। ভেবেছিলেন ক্যান্টিনে বসে আরাম করে খাবেন। এদিকে গরমটাও বেড়েছে খুব। তবে, এই গরমের জন্যেই রক্ষা পেলেন নাগরাকাটায় বিডিও অফিসের জনা কয়েক কর্মী। সিলিং ফ্যান চালাতে গিয়েই আঁতকে উঠছিলেন তারা। কারণ, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে একটি বিশাল আকার অজগর সাপ! এই নিয়ে সোমবার (৪ জুলাই) হুলুস্থুলু পড়ে যায় মালবাজার মহকুমার অন্তর্গত নাগরাকাটা বিডিও অফিসে।
নাগরাকাটা বিডিও অফিসের গাঁ ঘেষেই অবস্থিত অফিসের ক্যান্টিন। ওই ক্যাম্পাসে শুধু বিডিও অফিস নয়, রয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির অফিস, খাদ্য দপ্তরের অফিস, শিক্ষা সার্কেলের অফিসের মতো আরও বেশ কয়েকটি সরকারি কার্যালয়। ফলে, প্রায় সারাদিনই ওই ক্যান্টিনে কর্মীদের ভিড় লেগেই থাকে। সোমবার দুপুরেও ক্যান্টিনে খেতে এসেছিলেন কয়েকজন কর্মী। কিন্তু ফ্যান চালাতে গিয়েই অজগর সাপটিকে দেখতে পান তাঁরা। খাওয়া ওঠে মাথায়। মুহূর্তের মধ্যে খালি হয়ে যায় ক্যান্টিন।
এরপর খবর দেওয়া হয়, এলাকায় সর্পপ্রেমী হিসেবে পরিচিত সৈয়দ নইম বাবুনকে। তিনি এসে দেখেন, সিলিং ফ্যান থেকে সাপটি ক্যান্টিনের চালের এক অংশে লম্বালম্বিভাবে শুয়ে আছে। খুব সহজে সাপটিকে উদ্ধার করতে পারেননি বাবুন। একটি আঁকশির মতো ধাতব দন্ড দিয়ে তিনি সাপটিকে নিচে নামিয়ে আনার চেষ্টা করেন। তবে, দীর্ঘক্ষণ সাপটি কড়ি-বরগার সঙ্গে পেঁচিয়ে ঝুলে থাকে। প্রায় ৪৫ মিনিটের চেষ্টায় সাপটিকে উদ্ধার করেন বাবুন। পরে বস্তায় পুরে অজগরটিকে খুনিয়া রেঞ্জের বনকর্মীদের হাতে তুলে দেন তিনি। দুপুরেই অজগরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয় গরুমারা জঙ্গলে।
বিডিও অফিসের ক্যান্টিনে রান্না করেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তাঁরা জানিয়েছেন রান্না করার সময়ই তাঁরা ছাদ থেকে হিস্হিস্ শব্দ পেয়েছিলেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন সিলিংয়ে সন্দেহজনক কিছু একটা ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু তা যে এতবড় একটা অজগর। তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। কেন হঠাৎ জঙ্গল ছেড়ে বিডিও অফিসের ক্যান্টিনে ঢুকে পড়ল অজগর সাপটি? বনকর্মীরা মনে করছেন, এখন বর্ষা চলছে। জঙ্গলের চারদিকে জল থৈথৈ করছে। ফলে বন্যপ্রাণীদের অনেকেরই জঙ্গলে থাকা দুরুহ হয়ে পড়েছে। ফলে লোকালয়ে পালিয়ে আসছে তারা।