জলপাইগুড়ি: নাবালিকার গলায় আটকে ট্যাবলেট ব্যাটারি। ওই অবস্থায় গত ২৪ ঘন্টা ধরে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার ৩ হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে ক্ষুব্ধ পরিবার।
জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের সাকোয়া ঝোড়া ১ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের সজনে পাড়া গ্রামে বাড়ি বছর নয়েকের পার্বতী সরকারের। গত সোমবার রাতে খেলার ছলে বাড়িতে থাকা একটি ট্যাবলেট ব্যাটারি গিলে ফেলে সে। ব্যাটারিটি আটকে যায় তার গলায়। বাবা-মাকে জানাতেই তাঁরা তাকে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
ওই অবস্থায় নাবালিকাকে নিয়ে রাতেই জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যায় পরিবার। তাকে ভর্তি করেও নেওয়া হয়। পেটে ও বুকে এক্স-রে করলে তাতে কিছু ধরা না পড়ে না। চিকিত্সকরা তাকে কলা খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু বাড়ি না ফিরে মেয়েকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সেখানকার চিকিৎসক ফের এক্স রে করার নির্দেশ দেন। দেখা যায়, ব্যাটারিটি নাবালিকার গলায় আটকে রয়েছে। এরপর জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল থেকে তাকে রেফার করে দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
রাত পর্যন্ত তিনটে হাসপাতাল ঘোরে পরিবার। নাবালিকার পরিবারের সদস্যরা চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলছে। শেষমেশ নাবালিকাকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
ঘটনায় নাবালিকার মামা জলেশ রায় বলেন, ” রাত থেকে বাচ্চাকে নিয়ে আমরা একের পর এক সরকারি হাসপাতাল ঘুরলাম। কিন্তু আমার ভাগ্নির কোনও সঠিক চিকিৎসা হল না। আমরা সাধারণ মানুষ, অনেক কিছুই বুঝি না। যে কোনও বিষয়ে হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তাঁরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।”
ঘটনায় নাবালিকার জেঠু স্বপন সরকার বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। ধূপগুড়ি হাসপাতাল আমাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দিল। কিন্তু আমরা এখানে এসে কোনও পরিষেবাই পেলাম না। উলটে কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কোনও পরিষেবা নেই। তবে তা থাকার মানে কী! আমরা গরিব মানুষরা চাই হাসপাতালে সঠিক পরিষেবা পেতে।”
হাসপাতালে বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার চিকিত্সক সুস্নাত রায়। তিনি বলেন, “সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে সার্জেন দেখেছেন। তাঁর নির্দেশে এক্স রে হয়েছে। কিন্তু তাতে ব্যাটারির ছবি ধরা না পড়ায় তাকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখানে গলার এক্স রে করলে ব্যাটারির অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এরপর তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে চিপস খেতে গিয়ে প্যাকেটের মধ্যে থাকা গুলি এক ১৪ মাসের শিশুর পেটে চলে যায়। এক্স রে করে দেখা যায়, গুলি তার পাকস্থলিতে আটকে রয়েছে। তাকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।
আরও পড়ুন: Nadia: চিপস খাওয়ার জন্য কেঁদেছিল ১৪ মাসের শিশু, খেল গুলি! নদিয়ায় মর্মান্তিক ঘটনা