জলপাইগুড়ি: ডুয়ার্সে লোকালয়ে হাতির তাণ্ডব অব্যাহত। এবার হাতির হানায় মৃত্যু হল দুজনের। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে ডুয়ার্সের বানারহাটের কলাবাড়ি চা বাগানের গাড়া লাইনে । দলছুট হাতির হামলায় মৃত্যু হয় একই পরিবারের দু’জনের। সেই সঙ্গে আহত হন সেই পরিবারেরই আরও দুই সদস্য। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বানারহাট এলাকায়। মৃতদের নাম বাবুরাম মাজি (৬৩) ও বাহামুনি মাজি (৫৬)।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনটি হাতি ডায়নার জঙ্গল থেকে কলাবাড়ি এলাকায় খাবারের সন্ধানে ঢুকে পড়ে।সেই দলেরই একটি হাতি দলছুট হয়ে বাগানের গাড়ালাইন বস্তিতে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব চালায়। সেখানেই হাতির হামলায় প্রাণ যায় দুজনের । আহত হন আরও দুই ব্যাক্তি। বাবুরামরা দু’জনে কলাবাড়ি চা বাগানের গাড়া লাইনের বাসিন্দা। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের কর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদেরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যায় বানারহাট থানার পুলিশও। দীর্ঘক্ষণ বনকর্মীদের গ্রামে আটকে রাখা হয়, মৃতদেহ তুলতে বাধা দেওয়া হয়। প্রায় প্রতিদিন রাতেই জঙ্গল থেকে হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে খাবারের সন্ধানে। ঘরবাড়ি ভাঙছে, ক্ষতি করছে চাষের ফসল। বনদফতরের কাছে অভিযোগ জানিয়ে কোন লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। মিলছে না ক্ষতিপূরণ । এমনকি যারা বন্যপ্রাণী হামলা আহত হচ্ছে, তাঁদেরও সঠিকভাবে চিকিৎসা করানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
গ্রামবাসীদের হাতে রাতভর আটকা থাকার পর ভোর নাগাদ মৃতদেহ তুলতে দেন গ্রামবাসীরা। ভোররাতে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় বানারহাট থানায়। বুধবার সেই দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে। এ বিষয়ে আংরাভাষা ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতী ছেত্রী বলেন, “প্রায় প্রতিদিন হাতি গ্রামে ঢুকে পড়ছে। ঘরবাড়ি ভাঙছে।হাতির হামলায় প্রায়শই প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। বনদফতরের কর্মীদের খবর দিল তারা সঠিক সময়ে আসেন না। এমনকি ঘর বাড়ি ভাঙলে, ফসল নষ্ট করলেও ক্ষতিপূরণ সঠিক ভাবে তারা দেন না।”
হাতির হামলায় মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। যাঁদের ঘর ভেঙেছে, তাঁদেরও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।