জলপাইগুড়ি: নবান্নের ঠেলায় বেহাল কমিউনিটি টয়লেট পরিদর্শন করতে ছুটলেন ইঞ্জিনিয়ার। এ নিয়ে হইচই কাণ্ড জলপাইগুড়ি পুরসভায়। জলপাইগুড়ি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কমিউনিটি টয়লেট দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। সে গুলির দরজা বা চাল নেই। এই অবস্থায় এলাকাবাসীরা চিঠি লিখেছিলেন নবান্নে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নবান্ন থেকে একটি ইমেল আসে জলপাইগুড়ি পুরসভায়। আর এতেই হইচই পড়ে যায়।
জানা গিয়েছে, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ন্তী পাড়া এলাকার একটি বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে হরিজন বস্তি, হঠাৎ বস্তি এবং জয়ন্তী বস্তি। এই তিনটি বস্তি মিলিয়ে অত্যন্ত হাজার দুয়েক দরিদ্র মানুষ বসবাস করে। দীর্ঘদিন আগে এই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য জলপাইগুড়ি পুরসভার পক্ষ থেকে চারটি কমিউনিটি টয়লেট বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এই টয়লেটগুলির বেহাল দশা। যা মানুষের ব্যবহারের অযোগ্য।
অভিযোগ এলাকার কোনও মহিলা শৌচকর্ম করতে গেলে তিনি অন্য মহিলাকে পাহাড়া রেখে তার পর শৌচকর্ম সারেন। বিকল্প না থাকায় এলাকার মানুষকে এই টয়লেটই ব্যবহার করতে হত। প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা গত মে মাসে স্থানীয় কাউন্সিলর মনীন্দ্রনাথ বর্মণের কাছে আসে। এরপর সেই দাবিপত্রে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করে দেন। এর পর এলাকাবাসীরা সেই দাবিপত্রের প্রতিলিপি জলপাইগুড়ি পুরসভা, জেলাশাসক ও নবান্নে পাঠায়। এরপর নবান্নের পক্ষ থেকে জলপাইগুড়ি পৌরসভায় ইমেল পাঠিয়ে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়। এতেই নড়েচড়ে বসে পুর কর্তৃপক্ষ। শনিবার দুপুরে পরিস্থিতি সরজমিন তদন্ত করে রিপোর্ট তৈরি করতে ছুটে যান পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার।
স্থানীয় কাউন্সিলর মনীন্দ্র নাথ বর্মণ বলেছেন, “পর ভোটে আমি দাঁড়াবার পর যখন ওই এলাকায় ভোট চাইতে যাই তখন স্থানীয় মানুষ আমাকে চেপে ধরে। তাঁদের কমিউনিটি টয়লেটের বেহাল দশা। আমি নির্বাচিত হলে এই বিষয়গুলি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলাম। এরপর এলাকার মানুষ তাঁদের দাবিপত্র নিয়ে এলে তাতে আমি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে সুপারিশ করি। এর পর তারা দাবিপত্র নবান্নে পাঠায়। আজ পুরসভা থেকে ইঞ্জিনিয়ার গিয়েছিল। জানতে পারলাম অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই টয়লেটগুলি নির্মান করা হবে। এই ঘটনা প্রমান করে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কতটা মানবিক এবং সাধারণ মানুষের সমস্যাকে কতটা গুরুত্ব দেন।“
এই বিষয়ে জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চ্যাটার্জির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “নবান্ন থেকে ইমেল এসেছে। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শুরু করেছি।“ কমিউনিটি টয়লেট মেরামতের জন্য তৃণমূল কাউন্সিলর তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা টপকে নবান্নের দারস্থ হয়েছেন। এই বিষয় সামনে আসতেই এক দিকে যেমন অস্বস্তিতে পড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। অপর দিকে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। কেন এতদিন একটা সমস্যা ফেলে রাখা হয়েছিল তা নিয়েও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে আলোচনা করতে শোনা গিয়েছে।