জলপাইগুড়ি: তিস্তা পারের (Teesta River) জমির ‘বাটোয়ারা’ নিয়ে দুই শাসকদলের নেতার কথা কাটাকাটি টেলিফোনে। অভিযোগ, সেই কথা কাটাকাটির অডিয়োই (এই অডিয়োর সত্যটা টিভি নাইন বাংলা যাচাই করেনি) একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ছেড়ে দিয়েছেন খোদ তৃণমূলেরই বিধায়ক। শনিবার থেকে এই ঘটনা ঘিরে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়েছে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে। যদিও এই বিষয়ে রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে ফোন করা হলে তিনি এ নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি।
জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের এসসিএসটি ওবিসি সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস। অন্যদিকে ক্রান্তি ব্লকের তৃণমূল ব্লক সভাপতি মেহেবুব আলম। ভাইরাল অডিয়োটিতে এই দুই নেতার কথা কাটাকাটিই সামনে এসেছে বলে অভিযোগ। কার দখলে তিস্তা পারের ওই জমি থাকবে তা নিয়ে মূলত এই বাকযুদ্ধ বলে অভিযোগ ওঠে। ৫ মিনিট ৯ সেকেন্ডের সেই অডিয়োর ভাষা রাজবংশী।
অভিযোগ, ওই অডিয়োতে শোনা গিয়েছে, এক নেতা অপরজনকে বলছেন জমি নিয়ে কোনও রকম বেচাল হলে লোকজন জড়ো করে নিয়ে গিয়ে হামলা করতেও পিছ পা হবেন না তাঁরা। এ বিষয়ে মেহেবুব আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিষয়টি স্বীকার করেছেন কৃষ্ণ দাস।
কৃষ্ণ দাস বলেন, “সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই আমি জানলাম আমাদের বিধায়ক খগেশ্বর রায় এটা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ভাইরাল করেছেন। খোঁজ নিয়ে দেখব। তবে যে ঘটনা ঘিরে তর্ক হয়েছে, তা তিস্তা চরের জমি। নদীতে ভেসে ওঠা জমি। সেই জমি আমাদের বারোপাটিয়ার জমি। ক্রান্তির মেহবুব আলম বলেছিল এখানে চাষ করতে চায়। কিছু জমি দিতে। ৭০ বিঘা জমি উঠেছিল। ও বলল ২৫ বিঘা বারোপাটিয়াকে দিয়ে দেব। বাকিটা আমরা চাষ করব। আমি রাজি হয়ে যাই এক কথায়। চাষও হয়। বারোপাটিয়া ও ক্রান্তির কৃষকরা চাষ করেন। কিন্তু এরপর কৃষকদের সঙ্গেই কী একটা ঝামেলা হয়।”
কৃষ্ণ দাসের কথায়, “এরপরই মেহবুব আমাকে উল্টোপাল্টা বলতে থাকে। আমিও দু’ একটা কথা পাল্টা বলি। আমাদের মধ্যে একটু তর্ক বিতর্ক হয়। এটা প্রায় মাস তিনেক আগের ঘটনা। এমন বড় ব্যাপারও না। এখন জমিটা আর নেইও। জানি না এখন এসব নিয়ে কারও কিছু বলে কী লাভ! তবে আমাকে ছোট করতে এগুলো করা হচ্ছে। একটা কথা কাটাকাটি হতেই পারে। আমি জেলানেত্রী থেকে ঊর্ধ্বতন সকলকেই জানাবও বিষয়টি।”
এ নিয়ে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খগেশ্বর রায় তৃণমূলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান। আর যেহেতু এই অডিয়ো টেপ ওনার কাছ থেকে এসেছে তাই এ বিষয়ে আমার তো বলার কোনও এক্তিয়ার নেই।” তবে সৈকত চট্টোপাধ্যায় জানান, দলের দুই নেতা কেন এই ধরনের অপরিণত আলোচনা করলেন তা নিয়ে জেলা সভাপতির উচিৎ অবিলম্বে তাঁদের ডেকে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা। না হলে ভবিষ্যতে দলের অভ্যন্তরে এ নিয়ে বিবাদ হতে পারে।
এই ঘটনা নিয়ে রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অন্যদিকে মেহেবুব আলমের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বেজে গিয়েছে। কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: Maldah: আত্মহত্যা বলে চালাতে চাইছিল শ্বশুরবাড়ি, আসল রহস্য ফাঁস করল তিন বছরের ছেলে