জলপাইগুড়ি : চা বাগানের ঝোপে একটা আস্ত কালো কুণ্ডলী। দিনের আলোয় এমন দৃশ্য দেখে শিউরে উঠলেন চা বাগানের কর্মীরা। প্রাণ ভয়ে তখন তাঁরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছেন। কী সাপ, কত বড়, তা কেউ বুঝে উঠতে পারেননি তখনও। সাপের হাত থেকে নিস্তার পেতে যখন সবাই এ দিক-ও দিক ছুটছেন, সাপটিও ততক্ষণে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজা শুরু করে দিয়েছে। সে সোজা চলে যায় এক ব্যক্তির বাড়ির ভিতরে। সিলিং-এ উঠে পড়ে সেই লম্বা কিং কোবরা।
তরতরিয়ে সেই সাপ সিলিংয়ে পৌঁছে যাওয়া ভরদুপুরে কার্যত হুলস্থুল কাণ্ড শুরু হয়ে যায় ময়নাগুড়ির রামশাই এলাকায়। মঙ্গলবার দুপুরে ময়নাগুড়ি রামশাই চোরাই মোহন গ্রামের একটি ছোট চা বাগানে প্রথম দেখা গিয়েছিল সাপটিকে। সেই সময় বাগানে কাজ করছিলেন চা শ্রমিকেরা।
চা শ্রমিকেরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে সাপটি চা বাগান ছেড়ে পাশে দীনেশ রায় নামে এক ব্যক্তির বাড়ির শোবার ঘরে ঢুকে গিয়ে ওপরে উঠে যায়। এরপর খবর দেওয়া হয় রামশাই মোবাইল রেঞ্জ অফিসে। সেখান থেকে কর্মীরা এসে সাপটিকে শনাক্ত করেন। তাঁরাই জানান, এটি কিং কোবরা। এরপর ময়নাগুড়ি পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের সম্পাদক নন্দু রায়কে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে টিম নিয়ে ছুটে যান তিনি। প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় কিং কোবরা সাপটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন তাঁরা।
নন্দু রায় জানিয়েছেন, সাপটি তাড়া খেয়ে দীনেশ রায়ের বাড়ির শোবার ঘরে ঢুকে গিয়ে সিলিংয়ে উঠে বাঁশে পেঁচিয়ে বসেছিল। তা দেখে ভয়ে ঘরের ভিতর থেকে সবাই বাইরে বেরিয়ে পড়েন। এটি লম্বায় প্রায় ১০ ফুট। রামশাই মোবাইল রেঞ্জের কর্মীদের সঙ্গে প্রায় ৩০ মিনিটের যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে কিং কোবরা সাপটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।