গয়েরকাটা: ঘরের সামনের দরজাটা কোনওভাবে খোলা ছিল। তাতেই সুযোগ বুঝে ঢুকে পড়েছিল সে। ঘাপটি মেরে বসেছিল গোয়াল ঘরের সামনেই। বাড়ির পোষ্যের তারস্বরে চিৎকারেই টনক নড়ে বাড়ি মালিকের। তবে এদিন তার যোশ ছিল অনেকটাই কম। রক্তাক্ত ছিল সে নিজেই। মুখের সামনেই বড় ক্ষত। ঘায়েল চিতাবাঘ দেখা মাত্রই খবর যায় বনদফতরে। তারপর টানা ২ ঘণ্টার চেষ্টা। ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে অবশেষে কাবু চিতাবাঘ। ডুয়ার্সের গয়েরকাটা কালুয়া কলোনি এলাকায় রাতভর চাঞ্চল্য।
বাড়িমালিকের নাম শ্যাম সুন্দর ওঁরাও। বেশ কয়েকদিন থেকেই তাঁর বাড়ি ও আশপাশের এলাকা থেকে ছাগল হারিয়ে যাচ্ছিল। তখনই তাঁরা চিতাবাঘের আগমন টের পেয়েছিলেন। এর আগে তিনটি ছাগল চিতাবাঘে নিয়ে যায়। বুধবার সন্ধ্যায় ফের ছাগল খেতে এসেছিল চিতাবাঘটি। শ্যামসুন্দর বলেন, “আচমকাই বাড়ির কুকুর চিৎকার করতে শুরু করলে আমাদের মনে সন্দেহ তৈরি হয়। পরের গোয়াল ঘরে টর্চ মারতেই দেখি চিতাবাঘ রয়েছে। এরপর বনদপ্তরে খবর দিলে তারা এসে ঘুমপাড়ানি গুলি করেছে চিতাবাঘ থেকে উদ্ধার করে।”
চিতা বাঘের মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছিলেন বাড়ির মালিক। বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়ার্ডের বনকর্মীরা ছিলেন, সেইসঙ্গে মরাঘাট রেঞ্জ, রেঞ্জ ডায়না রেঞ্জের বন কর্মীরাও চলে আসেন গ্রামে। ২ ঘণ্টার চেষ্টায় ঘুমপাড়ানি গুলিতে অবশেষে কাবু হয় চিতাবাঘ। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় লাটাগুড়ি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে।
সীমা চৌধুরী ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন বলেন, চিতাবাঘটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর তাকে জঙ্গলে ফেরানো হবে। তার শারীরিক অবস্থার ওপর নজর রাখা হচ্ছে। কীভাবে মুখে ক্ষত তৈরি হল, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।