ধূপগুড়ি: সরকারি বাংলো যেন নেশার আখড়া। পান মশলা, গুটখা, সিগারেট তো আছেই সঙ্গে দোসর গাঁজায়। তাতেই বুঁদ পড়ুয়ার দল। স্কুল পোশাকেই একেবারে ঠেক বানিয়ে বসছে নেশার আসর। চলছে দেদার সুখটান। কিন্তু টিভি-৯ বাংলার ক্যামেরা দেখেই রণে ভঙ্গ। গাঁজা ফেলে ছুট পড়ুয়াদের। কেউ উঠল পাঁচিলে, কেউ লুকালো গাছের আড়ালে। প্রশ্নের মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা। এদিকে সরকারি নির্দেশ রয়েছে, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্কুল চত্বরে বিক্রি করা যাবে না নেশার সামগ্রী। সেই নির্দেশ যেন শুধুমাত্র কাগজ-কলমে। নির্দেশিকাকে থোড়াই কেয়ার! হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে যা চাই তাই! স্কুলের পাশেই গজিয়ে উঠেছে কত সব নানা রঙের, নানা স্বাদের নেশার দোকান। এ ছবিই দেখা যাচ্ছে ধূপগুড়ি জেলা পরিষদ ইন্সপেকশন বাংলোর ভিতরে। আস্ত সরকারি বাংলো যেন একেবারে নেশার আড়তে পরিণত হয়েছে।
বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে স্কুল পোশাকেই চলে আসছে সেখানে। বসে যাচ্ছে ঠেক। পাঁচ-ছয় জনের গ্রুপ করে বসছে আসর। প্রকাশ্য দিবালোকেই চলছে নেশা। প্রশ্নের মুখে পুলিশ-প্রশাসন থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরদারি। ধূপগুড়ি জেলা পরিষদ ইন্সপেকশন বাংলো থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরেই রয়েছে ধূপগুড়ি হাইস্কুল। অভিযোগ, সেখান থেকেই বেশিরভাগ পড়ুয়ারা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নেশা করতে ঢুকে পড়ছে বাংলার ভিতরে।
ক্যামেরা দেখে কয়েকজন পালিয়ে গেলেও একজনকে পাওয়া গেল শেষ পর্যন্ত। যদিও তার দাবি, সে এই মুহূর্তে স্কুলের ছাত্র নয়। কারণ, সে টিউশন পড়তে বেরিয়ে এখানে এসেছে। স্কুল থেকে আসেনি। তাই স্কুলের ছাত্র বলা ঠিক হচ্ছে না। তবে সে যে আসলেই ধূপগুড়ি হাইস্কুলে পড়ে তা মেনে নেয়। ক্যামেরা দেখে মুখ লুকাতে দেখা যায় আরও দুই ছাত্রকে। চেপে ধরতেই একজন বলল, “নেশা করতে আসিনি। ঘুরতে এসেছিলাম। আমার বাড়ি জলপাইগুড়িতে।” এদিকে ততক্ষণে তাঁর বন্ধু পাঁচিল ডিঙিয়ে দে দৌড়। কোন স্কুল, আই কার্ড কোথায় প্রশ্ন করতেই অন্যজনও ততক্ষণে একই পথে।