জলপাইগুড়ি: সিকিমের মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং তার জেরে উত্তরবঙ্গে তিস্তার আগ্রাসন তীরবর্তী বহু এলাকা ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে। সঙ্গে নতুন বিপদ। তিস্তাপারের যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর মর্টার শেল, গোলা বারুদও। সোমবার জল অনেকটাই নেমেছে। আর তারপর থেকে শুরু হয়েছে হড়পা বানে ভেসে আসা মর্টার শেল উদ্ধারের কাজ। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর জয়েন্ট সার্চ অপারেশন শুরু হয়েছে এদিন থেকে। গ্রামের বিভিন্ন পুকুরেও চলছে তল্লাশি।
এখনও অবধি জলপাইগুড়ির তিস্তার তীরবর্তী এলাকা থেকে ৪১ জনের দেহ উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স, এনডিআরএফ কাজ করছে যৌথভাবে। দেহ তল্লাশির পাশাপাশি এবার শুরু হয়েছে সমরাস্ত্র উদ্ধারের কাজও।
পুলিশের সঙ্গে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে সেনাও। জলপাইগুড়ির তিস্তা নদী সংলগ্ন মাল, রাজগঞ্জ, ময়নাগুড়ি, কোতোয়ালি- এই চার থানা এলাকা জুড়েই মূলত সার্চ অপারেশন চলছে। এই অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন না ইতিমধ্যেই মর্টার ভেসে এসে ঘটিয়েছে বিপত্তি। মালবাজারের ক্রান্তিতে এক শিশুর প্রাণ গিয়েছে সেই মর্টার শেল ফেটে।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, জলের তোড়ে ভেসে আসা মর্টার তুলে নিয়ে ঘরে চলে এসেছেন কেউ কেউ। অর্থাৎ বহু সাধারণ মানুষের ঘরে গিয়ে উঠেছে এই অস্ত্র, শেল। বিপদ হতে পারে জেনেও বাড়ি থেকে বের করছেন না সেগুলি। ভয়, যদি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। কারণ, বিস্ফোরক আইনের আওতায় চলে আসতে পারেন এক্ষেত্রে।
গত ৪ অক্টোবর সিকিম পাহাড়ে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে বন্যা দেখা দেয়। আর তাতে ভেসে যায় তিস্তার ধারে থাকা সেনা ছাউনি। বহু জওয়ান নিখোঁজ হন। পরে দেহও উদ্ধার হয় অনেকের। সেই বানে শুধু সেনা জওয়ানই নন, ভেসে গিয়েছে তাঁদের ব্যবহারের সমরাস্ত্রও। গত কয়েকদিনে বিক্ষিপ্তভাবে তা উদ্ধারও হয়েছে। কতটা বিপজ্জনক হতে পারে এই শেল, তা বুঝেই এবার উদ্ধারকাজে নামল পুলিশ ও সেনা। সার্চ অপারেশন না শেষ হওয়া পর্যন্ত যাতে কেই নদীতে না নামেন, সে কথাও ঘোষণা করা হচ্ছে।