ধূপগুড়ি: ধূপগুড়ি নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে গ্রেফতার করা হল মূল অভিযুক্তকে। পুলিশের দাবি, ধূপগুড়ি থানায় ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগ একজনেরই নাম উল্লেখ রয়েছে। বুধবার এলাকার পঞ্চায়েত ও স্থানীয়রাই অভিযুক্তকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। যুবককে গ্রেফতারের পর একদিনের রিমান্ডে নিয়েছে ধূপগুড়ি পুলিশ। এদিকে, ওই ঘটনায় আরও পাঁচ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, গত পরশু অর্থাৎ ২০ জুন বছর বারোর নাবালিকা একটি অনুষ্ঠান বাড়ি গিয়েছিল। সেই সময় তাকে অভিযুক্ত যুবক জোর করে টেনে নিয়ে যায় পাটক্ষেতে। অভিযোগ, সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে জানা গিয়েছে। এরপর সেই খবর জানার পর নির্যাতিতার পরিবার মঙ্গলবার দুপুরে থানায় অভিযোগ জানাতে এসেছিল। তবে মাঝপথেই এলাকার মাতব্বরা ওই পরিবারকে অভিযোগ জানাতে না দিয়েই সালিশি সভার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে।
এ দিকে,মেয়েটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয় তখন নির্যাতিতার পরিবার তাকে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করে।হাসপাতাল সূত্রে খবর, যেহেতু ধূপগুড়ি হাসপাতাল পরিকাঠামো গত দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে সেই কারণে নাবালিকাকে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে।
এদিকে, সময় বাড়লেও অভিযোগ ওই নাবালিকাকে ফেলেই রাখা হয় ধূপগুড়ি হাসপাতালে। ফলে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে শুরু করে। তখন স্থানীয় বাসিন্দা ও নাবালিকার পরিবার ফোন করে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের গোটা বিষয়টি জানিয়ে বলেন অর্থের অভাবে নির্যাতিতাকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে।
এরপর সাংবাদিকদের উদ্যোগে বিনামূল্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দেওয়া হয় এবং তাঁকে পাঠানো হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে। এরপর খবর পেয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা পৌঁছান নির্যাতিতাকে দেখতে। তখন সিপিএম-এর তরফে বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে জানানো হয়।
এ দিকে, এই ধর্ষণ সংক্রান্ত একটি অডিয়ো টেপ ভাইরাল হয়ে সাংবাদিকদের হাতে আসে। অভিযোগ, সেখানে অভিযুক্তকে বলতে শোনা যায় এই ঘটনায় তার পাশাপাশি আরও একাধিক ব্যক্তি এই কাণ্ডে জড়িত। যদিও , অডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি টিভি ৯ বাংলা।
সেই অডিয়োটির উপর ভিত্তি করেই পুলিশ ধর্ষণের মামলা রজু করেছে। নেওয়া হয়েছে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দী। বর্তমানে ওই নির্যাতিতা জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ওকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।’ অন্যদিকে, নির্যাতিতা বলে, ‘একটি ছেলে আমার জোর করে রাত্রিবেলা তুলে নিয়ে যায়। পাট ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে নোংরা কাজ করে।’ এই বিষয়ে সিপিএম নেতা জয়ন্ত রায় মজুমদার বলেন, ‘একটি ছেলে নাবালিকাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যায়। তারপর পাটক্ষেতে নিয়ে গিয়েই বন্ধু বান্ধব মিলে তাকে গণধর্ষণ করে। পরে গ্রামের মাতব্বরা চাপ সৃষ্টি করে যাতে থানায় না যায়। প্রথমে স্বাস্থ্য দফতরও মেয়েটির মেডিক্যাল পরীক্ষা করেনি। থানাও উদ্যোগ নেয়নি। পরে আমরা পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ দায়ের করাই।’