জলপাইগুড়ি: বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছিল আগেই। অপছন্দের প্রার্থী তালিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন অনেকেই। তবে জলপাইগুড়িতে সেই আগুন যে দাবানলে পরিণত হবে তা হয়ত ভাবা যায়নি। পুরভোটে একদিকে যেমন প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে অন্যদিকে আবার সামনে এসেছে শাসক দলের আদি- নব্য দ্বন্ধ। টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন শাসকদলের আদি কর্মী। তাঁকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া তো হলোই না উল্টে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে স্বতপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল। শুধু তাই নয় টেনে হিঁচড়ে প্রার্থীকে তোলা হলো পুলিশের গাড়িতে। তবে ছেড়ে দেননি অনুগামীরাও। রীতিমত পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এলেন পছন্দের প্রার্থীকে।
কী ঘটেছে?
সমস্যা তৈরি হয়েছিল প্রার্থী তালিকা প্রকাশকে কেন্দ্র করে। তৃণমূলের দেওয়া জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রথম তালিকায় ১ নং ওয়ার্ডে নাম ছিল আদি তৃণমূল নেতা মলয় ব্যানার্জীর। এরপর প্রকাশিত হয় নতুন তালিকা। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে দেখা যায় সেই তালিকায় মলয় ব্যানার্জীর বদলে নতুন নাম আছে নীলম শর্মার। এতেই ক্ষুব্ধ হন মলয় ব্যানার্জী। যেহেতু দল তিনি অনেক দিন ধরেই দলের সঙ্গে যুক্ত সেই কারণে ওই এলাকায় তাঁর জনসংযোগ চূড়ান্ত রকমের। একা মলয় নন, নাম বদলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন তাঁর অনুগামীরাও। পরক্ষণেই সিদ্ধান্ত নেন সোজা নির্দল থেকে দাঁড়াবেন মলয়।
মঙ্গলবারের ঘটনা
এরপর মঙ্গলবার বেলা ২. ৩০ মিনিট নাগাদ নির্দল প্রার্থী হিসেবে মহকুমা শাসকের অফিসের দিকে তার অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। এরপর তিনি পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। শুরু হয় বিক্ষোভ। পরে অবশ্য তিনি একাই মনোনয়ন জমা দিতে মহকুমাশাসকের অফিসে যান। অভিযোগ সেখানেও বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের বাধা পেয়ে ফের ধস্তাধস্তি হয়। এরপর বেলা ৩টে বেজে যাওয়ায় আর মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেননি তিনি। তবে এত বাধায়ও দমানো যায়নি বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাকে। স্থির করেন আদালতের মাধ্যমে মনোনয়ন জমা দেবেন। গতকাল একটি ই-ফাইল করে। এর পাশাপাশি তিনি বর্তমান তৃণমূল জেলা যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের দিকেও আঙুল তোলেন। তাঁর মতে গোটা ঘটনার পিছনেই রয়েছেন সৈকত।এ দিকে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করা সহ একাধিক ইস্যুতে গতকাল রাতেই পুলিশ মলয় ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে স্বত:প্রণোদিত মামলা করে।
বুধবার কী ঘটল?
এরপর আজ যখন ফের মনোনয়ন জমা দিতে গেলেন তখন পুলিশ আবারও আটকে দেন মলয় ব্যানার্জীকে। এবং গ্রেফতার করে তাঁকে। কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে গ্রেফতার করার পর তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়ার বদলে পুলিশ গাড়ি করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাতে থাকেন। এই রকম ভাবেই পুলিশের ভ্যান যখন মলয়ের বাড়ির কাছে অর্থাৎ জলপাইগুড়ি রায়কত পাড়া এলাকায় আসে সেই সময় ভ্যানকে ঘিরে ফেলেন অনুগামীরা। তারপর পুলিশের ভ্যান থেকেই মলকে কার্যত ছিনিয়ে নিয়ে চলে যান তাঁরা।
বিক্ষুব্ধ নেতা মলয় ব্যানার্জী বলেন, “আমায় চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ। বলল মেডিক্যাল টেস্ট কারাবে। কিন্তু কী টেস্ট করাবে জানি না। পরে আমার মানুষজন গিয়ে আমায় ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।”
কে এই মলয় ব্যানার্জী?
মলয় ব্যানার্জী। একসময় যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিলেন। জলপাইগুড়ি শহরের মধ্যে যখন তৃণমূলের তেমন কোনও কর্মী ছিলেন না সেই সময় মলয় ছিলেন দলের এক সক্রিয় কর্মী।
মুখ্যমন্ত্রী কী ঘোষণা করেছিলেন?
কয়েকদিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ-সাফ জানান, সুব্রত বক্সী,পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে তালিকা দিয়েছেন, সেটাই চূড়ান্ত’ পুরভোটের প্রার্থী তালিকা। আর যাঁরা নির্দলে নাম লেখাবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এবার প্রশ্ন এখানেই তাহলে কি এই কড়া পদক্ষেপের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? একজন প্রার্থী স্বইচ্ছায় মনোনয়ন জমা দিতেই পারেন। কিন্তু তাঁকে পুলিশি ঝামেলায় জড়িয়ে বারবার কেন মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না প্রশ্ন উঠছে সেখানেই।
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
জলপাইগুড়ি: বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছিল আগেই। অপছন্দের প্রার্থী তালিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন অনেকেই। তবে জলপাইগুড়িতে সেই আগুন যে দাবানলে পরিণত হবে তা হয়ত ভাবা যায়নি। পুরভোটে একদিকে যেমন প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে অন্যদিকে আবার সামনে এসেছে শাসক দলের আদি- নব্য দ্বন্ধ। টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন শাসকদলের আদি কর্মী। তাঁকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া তো হলোই না উল্টে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে স্বতপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল। শুধু তাই নয় টেনে হিঁচড়ে প্রার্থীকে তোলা হলো পুলিশের গাড়িতে। তবে ছেড়ে দেননি অনুগামীরাও। রীতিমত পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এলেন পছন্দের প্রার্থীকে।
কী ঘটেছে?
সমস্যা তৈরি হয়েছিল প্রার্থী তালিকা প্রকাশকে কেন্দ্র করে। তৃণমূলের দেওয়া জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রথম তালিকায় ১ নং ওয়ার্ডে নাম ছিল আদি তৃণমূল নেতা মলয় ব্যানার্জীর। এরপর প্রকাশিত হয় নতুন তালিকা। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে দেখা যায় সেই তালিকায় মলয় ব্যানার্জীর বদলে নতুন নাম আছে নীলম শর্মার। এতেই ক্ষুব্ধ হন মলয় ব্যানার্জী। যেহেতু দল তিনি অনেক দিন ধরেই দলের সঙ্গে যুক্ত সেই কারণে ওই এলাকায় তাঁর জনসংযোগ চূড়ান্ত রকমের। একা মলয় নন, নাম বদলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন তাঁর অনুগামীরাও। পরক্ষণেই সিদ্ধান্ত নেন সোজা নির্দল থেকে দাঁড়াবেন মলয়।
মঙ্গলবারের ঘটনা
এরপর মঙ্গলবার বেলা ২. ৩০ মিনিট নাগাদ নির্দল প্রার্থী হিসেবে মহকুমা শাসকের অফিসের দিকে তার অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। এরপর তিনি পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। শুরু হয় বিক্ষোভ। পরে অবশ্য তিনি একাই মনোনয়ন জমা দিতে মহকুমাশাসকের অফিসে যান। অভিযোগ সেখানেও বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের বাধা পেয়ে ফের ধস্তাধস্তি হয়। এরপর বেলা ৩টে বেজে যাওয়ায় আর মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেননি তিনি। তবে এত বাধায়ও দমানো যায়নি বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাকে। স্থির করেন আদালতের মাধ্যমে মনোনয়ন জমা দেবেন। গতকাল একটি ই-ফাইল করে। এর পাশাপাশি তিনি বর্তমান তৃণমূল জেলা যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের দিকেও আঙুল তোলেন। তাঁর মতে গোটা ঘটনার পিছনেই রয়েছেন সৈকত।এ দিকে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করা সহ একাধিক ইস্যুতে গতকাল রাতেই পুলিশ মলয় ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে স্বত:প্রণোদিত মামলা করে।
বুধবার কী ঘটল?
এরপর আজ যখন ফের মনোনয়ন জমা দিতে গেলেন তখন পুলিশ আবারও আটকে দেন মলয় ব্যানার্জীকে। এবং গ্রেফতার করে তাঁকে। কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে গ্রেফতার করার পর তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়ার বদলে পুলিশ গাড়ি করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাতে থাকেন। এই রকম ভাবেই পুলিশের ভ্যান যখন মলয়ের বাড়ির কাছে অর্থাৎ জলপাইগুড়ি রায়কত পাড়া এলাকায় আসে সেই সময় ভ্যানকে ঘিরে ফেলেন অনুগামীরা। তারপর পুলিশের ভ্যান থেকেই মলকে কার্যত ছিনিয়ে নিয়ে চলে যান তাঁরা।
বিক্ষুব্ধ নেতা মলয় ব্যানার্জী বলেন, “আমায় চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ। বলল মেডিক্যাল টেস্ট কারাবে। কিন্তু কী টেস্ট করাবে জানি না। পরে আমার মানুষজন গিয়ে আমায় ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।”
কে এই মলয় ব্যানার্জী?
মলয় ব্যানার্জী। একসময় যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিলেন। জলপাইগুড়ি শহরের মধ্যে যখন তৃণমূলের তেমন কোনও কর্মী ছিলেন না সেই সময় মলয় ছিলেন দলের এক সক্রিয় কর্মী।
মুখ্যমন্ত্রী কী ঘোষণা করেছিলেন?
কয়েকদিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ-সাফ জানান, সুব্রত বক্সী,পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে তালিকা দিয়েছেন, সেটাই চূড়ান্ত’ পুরভোটের প্রার্থী তালিকা। আর যাঁরা নির্দলে নাম লেখাবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এবার প্রশ্ন এখানেই তাহলে কি এই কড়া পদক্ষেপের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? একজন প্রার্থী স্বইচ্ছায় মনোনয়ন জমা দিতেই পারেন। কিন্তু তাঁকে পুলিশি ঝামেলায় জড়িয়ে বারবার কেন মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না প্রশ্ন উঠছে সেখানেই।
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা