পাহাড়পুর : সিলিংয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে দিদি। পা ঠেকে আছে মাটিতে। পাশে পড়ে আছে মোবাইল ফোন। দৃশ্য দেখে চিৎকার করে উঠল বোন। তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর ব্লকের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এক কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল গোটা এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে অর্পিতা রায় (২১) নামে ওই ছাত্রী জলপাইগুড়ি পি ডি উইমেন্স কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন।
বুধবার পরীক্ষা ছিল অর্পিতার। পরিবার সূত্রে খবর, পরীক্ষা দিতে সকালে বাড়ি থেকে বেরোয় অর্পিতা। তাঁর বোনও স্কুলে যায়। বাবা ও মা বেরিয়ে যায় কাজে। কার্যত ফাঁকাই পড়ে ছিল বাড়ি। পরীক্ষা শেষ হলে দুপুরের পর বাড়িতে ফিরে আসে অর্পিতা। তখন বাড়িতে আর কেউ ফেরননি। কিছুক্ষণ পর বিকেলে স্কুল ছুটি হলে বাড়িতে ফিরে আসে অর্পিতার বোন। ঘরে ঢুকতেই দেখে সিলিং থেকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে দিদি। এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠে অর্পিতার বোন। তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করছে পুলিশ। ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করে মনে করছে পুলিশ।
তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা সরজিৎ দেবনাথ বলেন, “মেয়েটা কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ত। ভাল মেয়ে ছিল। যে ঘর থেকে ওর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে সেখানে একটা মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। তবে কেন আত্মহত্য়া করল এটা বুঝতে পারছি না। ওর বোন স্কুলে গিয়েছিল। বাবা-মা কেউ বাড়িতে ছিল না। সেই সময়েই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।” কোতয়ালি থানার তদন্তকারী আধিকারিক জয়ন্ত বর্মণ বলেন, “আমরা এসে সিলিং থেকে মেয়েটাকে ঝুলতে দেখি। ও কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছিল বলে জানাচ্ছেন বাড়ির লোকেরা। আজ সেকেন্ড হাফে পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা দিয়ে এসে এ কাণ্ড করেছে। আমরা মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। রিপোর্ট এলে বুঝতে পারব কী কারণে মৃত্যু হয়েছে। একটা মোবাইলও আমরা উদ্ধার করেছি। সেটা থেকে কিছু পাওয়া যায় কিনা দেখা যাক।”