জলপাইগুড়ি (ধূপগুড়ি): বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও হিসাবে কাজ করেন মহিলা। শিক্ষকতার পাশাপাশি ভোটের নানা কাজ করেন তিনি। অভিযোগ, ভোটার তালিকায় এক তৃণমূল নেতা তাঁর ভাগ্নের নাম তোলার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছিলেন। সেই চাপ তোয়াক্কা না করায় ওই মহিলার স্বামীকে গ্রেফতার করানো হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল ধূপগুড়িতে (Dhupguri)। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের ওই নেতার হুমকির জেরেই ভোট কর্মী কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিডিওর কাছে ইস্তফাপত্র দেন বলে অভিযোগ। ধূপগুড়ি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানকার বাসিন্দা জয়া মল্লিক ওই ওয়ার্ডের ভোটকর্মী হিসাবে কাজ করেন। তিনিই এই অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির (INTTUC) ব্লক সভাপতি আলম রহমান। সেই আলমের ভাগ্নের ভোটার তালিকায় নাম তোলা নিয়েই জটিলতার সূত্রপাত।
জয়া মল্লিকের বক্তব্য, “৬ ডিসেম্বর যখন আমি স্কুলে গিয়েছি রমেন মহন্ত নামে এক তৃণমূল নেতা বলেন আলম রহমানের ভাগ্নে ভোটের তালিকায় নাম তুলবে। ওনার বাড়িতে দেখা করতে বলেন। আমি যাইনি ওনার বাড়ি। এরপরই রমেন মহন্ত আমাকে হুমকি দেয়। আমাকে রীতিমতো জেরা করছে, ‘কে আলম রহমান জানেন? তৃণমূলের উনি বড় নেতা’। আমি বললাম ফোনে কথা বলে নিলেই তো হল। আমরা বিডিও অফিসের আওতায় কাজ করি। আর মানুষ তো সকলেই সমান। বাকিরা যদি চেকলিস্ট নিতে আমার বাড়িতে আসতে পারেন, নেতার ভাগ্নে পারেন না? এরপর আমার স্বামীকে জেলে নিয়ে যাওয়া হল। আমি আর এই কাজই করব না।”
জয়ার দাবি, তাঁর স্বামী আশুতোষ মল্লিক এই হুমকি-হুঁশিয়ারি মানতে পারেননি। স্ত্রীকে ফোনে আলম গালিগালাজ করায় তিনি ফোনে দু’ চার কথা শোনান বলে অভিযোগ। এরপরই পুলিশ আশুতোষকে গ্রেফতার করে। জয়া মল্লিকের বক্তব্য, এ নিয়ে তিনি লিখিত আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু কেউই পাশে দাঁড়াননি। তাই তিনি কাজ ছাড়ছেন বলে বিডিওকে ইস্তফাপত্র দেন।
এ প্রসঙ্গে ধূপগুড়ি টাউন ব্লক আইএনটিটিইউসির সভাপতি আলম রহমানের বক্তব্য, “কোনও বিএলও কর্মীর সঙ্গে আমার এ ধরনের কোনও কথাবার্তাই হয়নি। এটা একেবারেই মিথ্যা অভিযোগ। কেউ যদি বলে থাকে সেটা তার ব্যাপার। তদন্ত করতে বলব প্রশাসনকে। তদন্ত করে যদি মিথ্যা প্রমাণ হয় আমিও প্রশাসনের দ্বারস্থ হব। আইনের পথে হেঁটে আমিও ব্যবস্থা নেব।”
ভাগ্নের ভোটার তালিকায় নাম তোলা প্রসঙ্গে আলম বলেন, “নাম তোলা সংক্রান্ত বিষয়টা একেবারেই প্রশাসনিক। এখানে হুমকি দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। নিয়মকানুন মেনে ভোটের নাম অবশ্যই উঠবে। কিন্তু ওনার স্বামী যে ভাষায় আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, হুমকি দিয়েছেন তার জন্যই আমি এফআইআর করি। নিজের নিরাপত্তার কারণেই আমি প্রশাসনের দ্বারস্থ হই। প্রশাসন তার কাজ করেছে।”