জলপাইগুড়ি: মণিপুরে ভয়াবহ ধসে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এখন অনেকের খোঁজ নেই। বুধবার রাতে ধস নামে। প্রায় ৫০ জন নিখোঁজ হয়ে যান। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। আর সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে নাগরাকাটার যুবক শঙ্কর ছেত্রীর। বছর কয়েক আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন শঙ্কর। সেই সূত্রেই মণিপুরে থাকতেন তিনি। নানা বিষয়ে দুঃশ্চিন্তা ছিলই। তবে, এ ভাবে যে ছেলেকে হারাতে হবে, তা ভাবতে পারেনি পরিবার। টেলিফোনে তাঁর মৃত্যুর খবর আসার পর থেকেই পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও পাঁচ বছরের মেয়ে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মংরুপাড়ার খাসবস্তিতে শঙ্করের বাড়িতে এই খবর পৌঁছয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মণিপুরের নানে জেলায় রেলের একটি প্রকল্পের কাজ চলছিল। অন্যদের সঙ্গে শঙ্করও সেই প্রকল্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। আচমকা পাহাড় থেকে নেমে আসা ধসে মারাত্মক জখম হন তিনি। পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
তিন ভাইয়ের মধ্যে শঙ্করই ছোট। তাঁর বাবা জানিয়েছেন, ছেলেবেলা থেকেই শঙ্কর স্বপ্ন দেখতেন সেনায় যোগ দিয়ে দেশ সেবা করার। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই বছর কয়েক আগে সেনায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আগামী অগস্ট মাসে অসুস্থ বাবা ভোজ বাহাদুর ছেত্রীর অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বাড়ি ফেরা হল না তাঁর। কথা বলতে গিয়ে এ দিন বার বার গলা ধরে আসছিল শঙ্করের স্ত্রী পুনমের।
কোনওরকমে তিনি জানান, মাস চারেক আগে বদলি হয়ে মণিপুরে গিয়েছিলেন শঙ্কর। ফোনে বারবার বলতেন দুঃশ্চিন্তা না করতে। তবে এমনটা হবে ভাবেননি পুনম। এ দিন দুপুর ২ টো নাগাদ শঙ্করের বাড়িতে তাঁর মৃত্যু খবর আসে। তা জানাজানি হতেই প্রচুর মানুষ তাঁর বাড়িতে ভিড় জমান। নম্র ও ভদ্র স্বভাবের ওই যুবকের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না প্রতিবেশীদের কেউই।
এ দিকে মণিপুরে ধসে মৃতের সংখ্য়া ক্রমশ বাড়ছে। এখনও অবধি ১৪ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। কমপক্ষে ৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। যাঁদের দেহ এখনও অবধি উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের আরও চার বাসিন্দা। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দার্জিলিং-এর দিবাকর রাণা, লাদুপ লামা, মিলন তামাং এবং ভূপেন রাই।
সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, লাগাতার বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছে। তবে দিনভরই চলছে উদ্ধারকাজ। উদ্ধার কাজে সাহায্য করছে রেল, এনডিআরএফ, এসডিআরএফও।