Banarhat: ‘কাজ না করলে খাব কী?’, জাতিগত শংসাপত্র না থাকায় চরম ভোগান্তিতে আদিবাসী পড়ুয়া

TV9 Bangla Digital | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Dec 18, 2022 | 1:43 PM

Jalpaiguri: জলপাইগুড়ি বানারহাট ব্লকের সাকোয়াঝোড়া-১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। বারবার দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে গিয়েও মেলেনি সুরাহা তাই হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দুয়ার থেকে আর এক দুয়ারে।

Banarhat: কাজ না করলে খাব কী?, জাতিগত শংসাপত্র না থাকায় চরম ভোগান্তিতে আদিবাসী পড়ুয়া
অনিতা কুমাল (নিজস্ব চিত্র)

Follow Us

বানারহাট: মাধ্যমিক পাশ করার পর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল মেয়েটি। তবে স্কুলে যাওয়া একপ্রকার বন্ধ। কারণ জাতিগত শংসাপত্র না থাকায় স্কুলে মিলছে না সরকারি সুযোগ সুবিধা। আর অর্থের অভাবে উচ্চশিক্ষা এখন অন্ধকারের পথে।

জলপাইগুড়ি বানারহাট ব্লকের সাকোয়াঝোড়া-১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। বারবার দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে গিয়েও মেলেনি সুরাহা তাই হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দুয়ার থেকে আর এক দুয়ারে। তবুও মেলেনি স্টাইপেনের টাকা। যার ফলে বন্ধ উচ্চশিক্ষা। সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল পেলেও অন্যান্য সুবিধা পায়নি। দুয়ারে সরকার শিবিরে আবেদন জানিয়েও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র। একাদশ শ্রেণীতে পাঠরত অনিতা কুমালের এখন প্রশ্ন কাজ না করলে খাব কী? তাই বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে পেট চালায় ‘ছোট্ট’ মেয়েটি।

ডুয়ার্সের বানারহাট ব্লকের সাকোয়াঝোড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মনমায়া কুমালের মেয়ে অনিতা কুমাল। বর্ষায় নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে চাষের জমি সহ বাড়িঘর। যার ফলে এখন একটি ঘরেই দিনযাপন করেন তাঁরা। রান্না, বই পড়া, খাওয়া দাওয়া এবং ঘুমানো সব একঘরেই হয়। গরু, ছাগল, হাঁস মুরগি, শুয়োর প্রতিফলন করেই দিনযাপন করছেন তাঁরা। এমনকী মাঝেমধ্যেই অন্যের বাড়িতে কাজ করতেও যেতে হয়। আর তাই বাড়ির সেই সমস্ত গৃহপালিত পশু দেখার জন্য এবং খাবার জোটাতে এক প্রকার মাধ্যমিক পাস করার পরও একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হলেও বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি অনিতা।

অনিতার কথায়, “কাজ না করলে খাব কী? বিদ্যালয় থেকে সবুজসাথীর সাইকেল পেয়েছি। তবে কন্যাশ্রী আবেদন যেমন করতে পারিনি তেমনি শিক্ষাশ্রী সহ অন্যান্য সুবিধা নিতে পারিনি।কারণ আমার জাতিগত শংসাপত্র নেই। একাধিকবার দুয়ারে সরকার সহ গ্রাম পঞ্চায়েতে এবিষয়ে আবেদন করলেও জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি।”

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে যখন একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে তখন যাদের প্রয়োজন তারাই সেই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন? কবে পাবে অনিতা তার জাতিগত শংসাপত্র ? আর কবে থেকে সে তার পড়াশোনা শুরু করতে পারবে, স্কুলে যেতে পারবে, কবে থেকে সে শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রীর মত সুবিধা পাবে? যদিও প্রশ্ন অনেক তবে উত্তর এখনও অধরা।

জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্যা মমতা সরকার বৈদ্য বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না, আপনাদের মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম সমস্যার কথা। ওই এলাকার বহু মানুষ যারা সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেননা যেসমস্ত কাজগুলো দুয়ারে সরকারে হয়ে যাওয়ার কথা। সে কাজগুলো জানিনা কী কারণে হয়নি। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন যে তিনদিনের মধ্যেই প্রত্যেক জাতির শংসাপত্র তুলে দিতে সেখানে এই মেয়েটি বারবার গিয়েও তার কাজ হয়নি। আমি ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করব এবং প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।”

Next Article