জলপাইগুড়ি: পুজোর পর থেকে রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা (Corona)। শুধু কলকাতায় নয়, জেলায়-জেলায় একই ছবি। প্রতিদিন করোনা গ্রাফ উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। শুধু সংক্রমণ নয়, ক্রমাগত বেড়েছে মৃত্যুও। কিন্তু তারপরও সচেতন হচ্ছেন না মানুষজন। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরের করোনা (Corona) চিত্র অন্তত এমনটাই বলছে।
শহর থেকে উধাও করোনা বিধি,মাস্ক বিহীন অবস্থাতেই ঘুরছে শহরবাসী। সঙ্গে জমায়েতও চলেছে। এই জলপাইগুড়ির এই হাল দেখে প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকা এবং নজরদারি। যখন করোনার গ্রাফ বাড়তে শুরু করেছে রাজ্য এবং জেলায় তখন কেন নিরব পৌর কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসন উঠতে শুরু করেছে এমন সব প্রশ্ন।
মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ (North Bengal) সফরকালে একদিনই জলপাইগুড়ি জেলাজুড়ে পুলিশি ধরপাকড় লক্ষ্য করা যায়। এমনকি ধুপগুড়িতে পুলিশ রাস্তায় নেমে মাস্ক বিহীন মানুষদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করে। পাশাপাশি তাঁদের সতর্ক করার কর্মসূচিও পালন করে। তবে সেটা একদিনই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার পর থেকেই সেই চেনা ছবি। শহরে নেই পুলিশি নজরদারি। নেই ধরপাকড়। বেপরোয়া শহরবাসী। অধিকাংশ মানুষের মুখেই নেই মাস্ক। এমনকি টোটো চালক ভ্যানচালক,পাশাপাশি বসে যাঁরা সফর করছেন তাঁদেরও মুখে মাস্ক নেই।
স্বাস্থ্য দপ্তর এবং বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন করোনা (Corona) থেকে বাঁচতে হলে “মাস্ক মাস্ট”। তবুও শহরে মানুষ মাস্ক পরছেন না একাংশ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে অমান্য করে বেপরোয়া মনোভাব একটা অংশের মানুষের। এদিকে, এক টোটোচালককে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চায় টিভি ৯ বাংলা। তখন তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে ক্যামেরার সামনে ক্ষমা চেয়ে নেন।
যদিও পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি ব্যবসায়ী এবং টোটো চালকদেরকেও সতর্ক করা হয়। যাতে কোনওভাবে করোনা বিধি অমান্য করা না হয়। পাশাপাশি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে টোটোতে বিভিন্ন করোনা সচেতনতা সংক্রান্ত স্টিকার আটকানোর। একই সঙ্গে মাস্ক ছাড়া যাত্রী পরিবহন করা যাবে না, যদিও শহরের অধিকাংশ টোটো চালক মাস্ক বিহীন অবস্থায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এমনকি যাত্রীরাও মাস্ক ছাড়াই টোটো তে সফর করছেন। আর ক্যামেরা ধরতেই নানান অজুহাত দিতে শুরু করলেন তাঁরা।
দুর্গাপুজোর পর থেকেই হাজারের দোরগোড়ায় ঘোরাফেরা করছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ। রাজ্য়ে করোনার এই ছবি স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা চিন্তায় রাখছে স্বাস্থ্য ভবনকে। সোমবার সকাল ৯ টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯ টার মধ্যে রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮০৬ জন। গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ৮০৫। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, বাংলায় শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। পাশাপাশি সুস্থও হয়ে উঠছেন অনেকে। রাজ্যে শেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮১১ জন।
জলপাইগুড়িতে গতকাল আক্রান্ত ৪ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১০ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ১৭। তবে মৃত্যুর খবর নেই।
আরও পড়ুন: Petrol Price Hike: দু’দিন পর শহরে ফের বাড়ল পেট্রোলের দাম, সেঞ্চুরি ছুঁতে চলেছে ডিজেলের