জলপাইগুড়ি: সমপ্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেখানে গিয়ে উত্তর কন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন তিনি। পরে একাধিক বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। সেই সব বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম আরও একটি বিষয় ছিল ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ। কারণ মশার আঁতুর ঘর হিসেবে পরিচিত হল জলপাইগুড়ি সহ উত্তরের বিভিন্ন জেলা।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। জেলার চা বাগান,বনবস্তি সহ বিভিন্ন এলাকায় যাতে পতঙ্গ বাহিত রোগ ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত নিজে উদ্যোগ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর সহ অন্যান্য দফতরে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য নেন।
পরে তিনি জেলাজুড়ে থাকা আদিবাসী অধ্যুষিত বিভিন্ন চা বাগান সহ বনবস্তি এলাকার মানুষের মধ্যে মশারি ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা প্রচার ও মশারি বিতরণ করতে উদ্যোগী হন।
সেই কর্মসূচীর অঙ্গ হিসেবে সোমবার বিকেলে জলপাইগুড়ি ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে একটি সচেতনতা শিবির করে তিন শতাধিক পরিবারের হাতে মশারি বিতরণ কর্মসূচির সূচনা করেন তিনি।
এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “চা বাগান বা বনবস্তি এলাকাগুলিতে স্বাভাবিক ভাবে মশার উপদ্রব বেশি। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মশা বাহিত রোগের প্রকোপ কমাতে উদ্যোগী হয়ে আমাদের কিছু ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী আমরা জেলাজুড়ে মশা বাহিত রোগ নিয়ে সচেতনতা প্রচার করার পাশাপাশি এলাকাবাসীদের মধ্যে মশারি ব্যবহার করতে অনুরোধ করছি। পাশাপাশি তাদের মধ্যে মশারী বিতরণ কর্মসূচি নিয়েছি। আজ আমরা ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে মশারি বিতরণ করে কর্মসূচির সূচনা করলাম। গোটা জেলাজুড়ে এই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেব।”
এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার জীবন চন্দ্র পাণ্ডে, জলপাইগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চ্যাটার্জী, সমাজসেবী কৃষ্ণ দাস সহ অন্যান্যরা।
এদিকে, জেলার ফুটে উঠেছে একের পর এক ডেঙ্গি আক্রান্তের ছবি। গতকাল বিধাননগরের খোলা জমিতে পড়ে থাকতে দেখা যায় আর্বজনা। যে যখন পারছে এসে ময়লা ফেলে যাচ্ছে। আবর্জনার সেই জমির পাশ দিয়েই বইছে কাঁচা নর্দমা। দেখেই বোঝা যায়, নর্দমা পরিষ্কার হয় না। এলাকায় দেখা নেই সাফাইকর্মীদের। আর এই ‘গা-ছাড়া’ মনোভাবেই বিধাননগর পৌরনিগমে দেখা গিয়েছে ডেঙ্গু (Dengue) আতঙ্ক। একের পর এক পরিবার আক্রান্ত হয়েই চলেছে ওই পৌরনিগম এলাকায়।
সূত্রের খবর, বিধাননগর পৌরনিগমের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাগুইআটি অর্জুনপুর এলাকা জুড়ে একাধিক পরিবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। শুধু তাই নয়, দেখা গিয়েছে, একই পরিবারের সকল সদস্যই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু, পুরসভার কোনও হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ। এলাকায় দেখা যায় না কোনও সাফাইকর্মীকে।