জলপাইগুড়ি: উত্তরবঙ্গে শাসকদলের হাই ভোল্টেজ সভা। ২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে প্রচার চালাতে আগামী ১২ জুলাই ধূপগুড়িতে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শনিবার জলপাইগুড়ি পাহাড় পুর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে তা নিয়ে ব্যস্ততা ছিল চরমে। ধূপগুড়িতে অভিষেক ব্যানার্জির সভা এবং ২১ জুলাই ধর্মতলার সভায় পাহাড় পুর অঞ্চলের কোন বুথ থেকে কতজন করে নিয়ে যাওয়া হবে, তা নিয়ে একটি বড়সড় প্রস্তুতি সভা করে তৃণমূল। কিন্তু সেই সভা হয়েছে সরকারি অফিসে। দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি সরকারি অফিসে হওয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জলপাইগুড়িতে। তৃণমূল সুত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেকের ধূপগুড়ির এই সভায় কমপক্ষে ১ লক্ষ যুব কর্মীকে হাজির করানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেই উপলক্ষে জেলার প্রতিটি অঞ্চলকে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রাও দেওয়া হয়েছে।
শুধু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা নয়। একই সঙ্গে আগামী ২১ জুলাইয়ের সভায় কলকাতায় কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিটি অঞ্চলকে আলাদা করে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। এই দুই লক্ষ্যমাত্রা ঠিকমতো বাস্তবায়িত করতে নাওয়া খাওয়া ভুলে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তৃণমূল নেতারা। জলপাইগুড়ি জেলার অন্যান্য অঞ্চলের মতো জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর অঞ্চলকেও ১২ এবং ২১ জুলাইয়ের সভায় কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। এই জোড়া কর্মসূচি সফল করতে গত শনিবার জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে একটি বড়সড় দলীয় সভার আয়োজন করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। সভায় উপস্থিত ছিলেন পাহাড়পুর অঞ্চল প্রধান অনিতা রাউত, উপ প্রধান বেণুরঞ্জন সরকার সহ সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্য এবং সদস্যা। এলাকার অন্যান্য তৃণমূল নেতারাও ছিলেন সেখানে।
আর এই বৈঠকের কিছু ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কর্মীরা। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়তেই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠেছে, গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে কি কোনও রাজনৈতিক সভা করা যায়? এ নিয়ে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন “এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ তৃণমূল দল আর সরকার বলে আলাদা কিছু নেই। ওরা সব জায়গাকে এক করে দিয়েছে। ওদের দলীয় কার্যালয়ে আমলাদের দেখা যায়। সমস্ত সরকারি অফিস তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এরা হাসপাতালকেও রাজনীতির আখড়া বানিয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু আমরা আশা করতে পারি না।”
ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়। তিনি বলেন “এই ঘটনা আমার জানা নেই। যদি এই ঘটনা ঘটে থাকে, তবে অন্যায় হয়েছে। অঞ্চল অফিসে রাজনৈতিক সভা করা যায় না। বিষয়টি নিয়ে আমি খোঁজ নিচ্ছি।”