কোচবিহার: শনিবার কোচবিহারের (Coochbehar) মাথাভাঙার সভায় রাজবংশী যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজবংশী ইস্যুতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দিলেন তিনি। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর জবাবদিহির দাবিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন অভিষেক।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অমিত শাহর ডেপুটি নিশীথ প্রামাণিক কোচবিহারের সাংসদ তাঁর নাকের ডগায় বিএসএফ গিয়ে রাজবংশীদের হত্যা করছে। ক্ষমতা থাকলে অবস্থান স্পষ্ট করুন। এর বিরুদ্ধে অবস্থান করব আমরা। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে ছ’টা পর্যন্ত নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাও হবে ও অবস্থান বিক্ষোভ চলবে।” এই বিষয়ে নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “রাজনৈতিকভাবে এতটাই উনি অপরিপক্ক ওনার সম্বন্ধে কিছু বলতে গেলে হাসি পায়। কিন্তু তাতে হবে কী? আমার বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা থাকেন। ওনার দম থাকলে দিল্লিতে আসুন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাও করে দেখান। কারণ আমার অফিস দিল্লির নর্থ ব্লকে। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়ে উনি উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন।”
প্রসঙ্গত, শনিবার তৃণমূলের মাথাভাঙায় সভা ছিল বঙ্গভঙ্গের দাবির বিরুদ্ধে। বাংলা ভাগের দাবিদার কারা? উত্তরবঙ্গে রাজবংশী মানুষ, গোর্খা, আদিবাসী তাঁদের দাবি উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করা হোক। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়ার জন্যই ছিল সেদিনের এই সভা। কিন্তু বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে কথা বললে যেই সম্প্রদায় সবথেকে বেশি আহত হবে তারা রাজবংশী। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সুকৌশলে এই রাজবংশী পরিবারকে মঞ্চে এনে অভিষেক বক্তব্য রাখলেন সঙ্গে রাজবংশীদের পাশে থাকার বার্তাও দিলেন। এ দিন অভিষেক একদিকে যেমন বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে বার্তা দিলেন অপরদিকে রাজবংশী আবেগকেও তুলে ধরলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল।
ওইদিন অভিষেক মঞ্চে ডাকেন বিএসএফ-এর গুলিতে প্রাণ হারানো রাজবংশী যুবক প্রেম কুমার বর্মণের মা-বাবাকে। সভামঞ্চে তাঁদের ডেকে অভিষেক বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি এই রাজবংশী তরতাজা যুবককে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে যার প্রাণ নিল বিএফএফ, রাজবংশীদের হত্যা করে যাঁরা রাজবংশীদের দরদ দেখায় আমি সেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও এখানকার ডেপুটিকে প্রশ্ন করতে চাই প্রেম কুমার কে ছিলেন? জঙ্গি? ওর অপরাধ কী? সে রাজবংশী? তিনি যখন সকালে মাঠে ঘুরতে গিয়েছিলেন তার কাছ থেকে কি বোমা-বন্দুক উদ্ধার হয়েছিল? তার থেকে গরু পাওয়া গিয়েছিল? ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম। তোমাদের অবস্থান স্পষ্ট করো। ক্ষমা চাও।”