নাগরাকাটা: পিএইচই জলের রিজার্ভার (reservoir) পরিষ্কার করতে গিয়ে মৌমাছির কামড়ে আহত চার সাফাই কর্মী। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকলেন রিজার্ভারের ভেতর। আহতদের উদ্ধারে গিয়ে কামড় খেতে হল দমকল কর্মীদেরও। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে নাগরাকাটা (Nagrakata) এলাকায়। সূত্রের খবর, মাটি থেকে ১০০ ফুটেরও বেশি উচ্চতায় থাকা ৪৫ হাজার গ্যালন আয়তনের জলাধার পরিষ্কারে এদিন হাত লাগান ৪ সাফাই কর্মী বিশ্বজিৎ দাস (২২), পবিত্র দাস (২৩), পাপাই বালা (২১), বিশ্বজিৎ সরকার (২১) কিন্তু, কে জানে সেখানে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে অন্য এক বিপদ। জলাধারকে আধার করেই বেড়ে উঠেছিল ৯টি মৌমাছির চাক। জলাধারে বাসা বেঁধেই নিশ্চিন্তে কাটছিল মৌমাছিদের দিন। কিন্তু, ৪ আগন্তুককে দেখে মুহূর্তেই হামলা করে মৌমাছির দল।
চার সাফাই কর্মী জলাধারের উপরে উঠতেই লাগাতার খেতে থাকেন মৌমাছির কামড়। তাঁদের চিৎকারে ততক্ষণে উপরে উঠে পড়েছেন এক দমকল কর্মী। কিন্তু, নিস্তার পাননি তিনিও। তাঁর উপরেও সদলবলে তেড়ে আসে মৌমাছিরা। ভয়ে ৫ জনেই ঢুকে পড়েন রিজার্ভারে। এদিকে ততক্ষণে নীচে ভিড় বেড়েছে উৎসুক জনতার। উপরে হুলস্থল কাণ্ড দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় সকলের। খবর যায় পুলিশে। ছুটে আসেন নাগরাকাটার বিডিও বিপুল কুমার মণ্ডল।
তবে ততক্ষণে উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে মৌমাছি তাড়ানোর উপায় খুঁজে বের করেছেন স্থানীয় ৩ ব্যক্তি। রসুন, ব্লিচিং পাউডার সঙ্গে কীটনাশক স্প্রে এনে দিতে বলেন তাঁরা। প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশে মুহূর্তেই এসে যায় সব। রসুন খেয়ে নেন সকলে। জামা-কাপড়ের উপর মেখে নেন ব্লিচিং পাউডার। পিএইচই-র জলাধারের সিড়ি বেয়ে তরতর করে উপরে উঠে পড়েন। মৌমাছির ভনভন শব্দল শোনা গেলেও তাঁদের কিছুই করেনি মৌমাছির দল। এরপর রিজার্ভারে আটকে থাকা ব্যক্তিদেরও একই কায়দায় খাওয়ানো হয় রসুন। মাখানো হয় ব্লিচিং পাউ়ডার। নির্বিঘ্নে নামিয়ে আনা হয় নীচে। উদ্ধারকারী ভীম বাহাদুর বলছেন, “রসুন আর ব্লিচিংই মূল হাতিয়ার। মৌমাছি এতে কাছে ঘেঁষে না।” নাগরাকাটা থানার আইসি কৌশিক কর্মকার বলছেন, “উদ্ধারের কাজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও ওরা যেভাবে তা করেছেন তা অবাক করার মতো। প্রত্যেককে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।”