জলপাইগুড়ি: নীল সাদা পোশাক নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলার একাধিক স্কুলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। প্রতিবাদে সরবও হয়েছেন তাঁরা। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল জলপাইগুড়ির শতবর্ষ প্রাচীন স্কুল। শতাব্দী প্রাচীন স্কুলের ঐতিহ্য বজায় রাখতে নীল সাদা পোশাক ফিরিয়ে দিল পড়ুয়ারা। বুধবার বিকেলে জলপাইগুড়ি ফণীন্দ্রদেব বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। খবর ছড়াতেই শুরু হয় চাপানউতর। বুধবার থেকে আগামী তিন দিন স্কুলের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে নতুন পোশাক বিলি করার কথা। স্কুলের তরফে আগাম নোটিস দিয়ে তা জানানো হয়। সেইমতো এদিন নতুন পোশাক নিয়ে হাজিরও হন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। জামা ভর্তি বস্তা খুলতেই নজরে আসে নীল সাদা পোশাক। যা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। তাঁরা নতুন পোশাক ফেলে রেখেই বাচ্চাদের নিয়ে বেরিয়ে যান।
নিমাই নন্দী নামে এক অভিভাবক বলেন, “স্বনির্ভরগোষ্ঠী নীল সাদা পোশাক দিচ্ছে। তবে আমরা স্পষ্ট বলি এই পোশাক নেব না। আমি নিজে এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। আমার ছেলেও এই স্কুলেই পড়ে। এই স্কুলের পোশাকের একটা ঐতিহ্য আছে। আমিও খাকি প্যান্ট, সাদা শার্ট পরে স্কুল করেছি। আমার ছেলেও এই পোশাক পরেই স্কুলে আসে। এটা আমার কাছেও একটা গর্ব। কিন্তু আজ যদি এটায় বদল আসে তা হলে তো আমারও একটা খারাপ লাগবে। একশো বছরের ঐতিহ্য এটা। নীল সাদা পোশাক দিচ্ছেন ভাল কথা। কিন্তু সেটা কেন সকলে মেনে নেবে? আমাদের খাকি প্যান্ট সাদা জামা দিতে হবে। হঠাৎ করে সব কিছু বদলে দেওয়া যায় না।”
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রকাশ কুণ্ডু বলেন, “সরকারি নির্দেশমতো স্বনির্ভরগোষ্ঠীগুলির আবেদনক্রমে এদিন পোশাক দেওয়ার দিন ছিল। আপনারা দেখলেন কী হল। অভিভাবকরা এর প্রতিবাদ জানালেন। ওনারা বলছেন এই পোশাক তাঁরা নেবেন না। আমাদের কাজ মধ্যস্থতা করা। সরকারি যে নির্দেশ তা ফলো আপ করা। সেটা আমরা করেছি। ড্রেস দেওয়াটা আমার কাজ, নিচ্ছে কি না সেটা আমার কাজ নয়। আমি সরকারি নির্দেশমতো অনুরোধ করেছি। কতজন নিল বা নিল না এই হিসাবটাও স্বনির্ভরগোষ্ঠীর লোকেরাই বলতে পারবেন। এখনও পোশাক দেওয়ার আরও দু’টো দিন আছে। দেখা যাক ওনারা নেন কি না।” এর আগে জলপাইগুড়ি জলপাইগুড়ি গার্লস স্কুল, জেলা স্কুলেও একই বিরোধিতার ছবি দেখা যায়।