DM: ‘আমিও তো বাড়ির টয়লেট নিজে পরিষ্কার করি’, সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীকে ধমক ডিএমের
Jalpaiguri: স্থানীয় বাসিন্দা প্রসেনজিৎকুমার লালা বলেন, "আমাদের গ্রামে জেলাশাসক নিজে এসে অভাব অভিযোগ শুনছেন। এতে আমরা অভিভূত। আমরা চাই এভাবে যেন মাঝেমধ্যেই সরকারি আধিকারিকরা গ্রামে এসে খোঁজ নেন। তাহলে অনেক সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।"
জলপাইগুড়ি: এলাকার নতুন বাথরুম তৈরি হয়েছে। কিন্তু তা পরিষ্কার কররা লোকের অভাবে খোলা যাচ্ছে না। গ্রামবাসীদের এ হেন কথা শুনে থমকালেন জেলাশাসক। এরপরই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীকে ধমক দিয়ে জলপাইগুড়ি জেলাশাসক শামা পারভিন বলেন, ‘আমার টয়লেট আমি নিজে সাফাই করি। প্রয়োজনে আপনারাও করুন।’
গ্রামের হাল হকিকত কীরকম, গ্রামের মানুষ সরকারি পরিষেবা কতটা পাচ্ছেন, গ্রামে থাকা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির হাল, মিডডে মিলের মান দেখতে বৃহস্পতিবার পরিদর্শনে বেরোন শামা পারভিন। পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলাশাসক, বিডিও সহ অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে গ্রাম পরিদর্শনে গেলেন জলপাইগুড়ি জেলাশাসক শামা পারভিন। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বোয়ালমারি নন্দনপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা পরিদর্শন করেন।
এদিন সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিজের ব্লাড প্রেশারও মাপান জেলাশাসক। স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে মিডডে মিলও খান। স্বাদ ভাল লাগায় দ্বিতীয়বার চেয়ে নেন তিনি। এদিনের পরিদর্শনে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অভাব অভিযোগ শোনেন জেলাশাসক। সমস্যা সমাধান করবার লক্ষ্যে আধিকারিকদের ডেকে তা নোট করে নিতে বলেন। একইসাথে তা দ্রুত সমাধান করতে নির্দেশ দেন।
গ্রামের বাজারেও যান জেলাশাসক। পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন। মানুষের কাছ থেকে অভাব অভিযোগ শোনেন। সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে গ্রামের মানুষেরা কেমন পরিষেবা পাচ্ছেন তা দেখতে নিজেই চলে যান সেন্টারে। সেখানে গিয়ে তিনি নিজের ব্লাড প্রেশার ও সুগার পরীক্ষা করান।
গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ আসে, নতুন পাবলিক টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সাফাই করবার লোক না থাকায় কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। তালা মেরে রেখে দেওয়া হয়েছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান। কর্মীদের ধমক দিয়ে বলেন, এভাবে সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার না করে নষ্ট হতে আমি দেব না। আমার বাড়ির টয়লেট আমি নিজে সাফাই করি।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রসেনজিৎকুমার লালা বলেন, “আমাদের গ্রামে জেলাশাসক নিজে এসে অভাব অভিযোগ শুনছেন। এতে আমরা অভিভূত। আমরা চাই এভাবে যেন মাঝেমধ্যেই সরকারি আধিকারিকরা গ্রামে এসে খোঁজ নেন। তাহলে অনেক সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।”
কচুয়া বোয়ালমারি হাইস্কুলের টিচার ইনচার্জ জিতেন্দ্রনাথ সরকারেরও একই বক্তব্য। স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন আধিকারিকরা। তিনি বলেন, “জেলাশাসক এসেছেন এটা সত্যি ভাল দিক। উনি মিডডে মিল থেকে নানা দিক দেখলেন। উনি নিজে খেয়েও দেখলেন।” জেলাশাসক শামা পারভিনের কথায়, “আমরা প্রত্যেক গ্রামপঞ্চায়েতের জনপরিষেবা খতিয়ে দেখব। কীভাবে কাজ হচ্ছে নজর রাখছি আমরা। আইসিডিএস সেন্টার, মিডডে মিল, হেলথ সেন্টার সব দিক দেখছি। পিএইচই প্রকল্পের কাজও আমরা দেখছি।”