জলপাইগুড়ি: টিয়াপাখি বিক্রি করার অপরাধে তিন বছরের জন্য জেল হল এক ব্যক্তির। বন্যপ্রাণী (Wildlife) ব্যবসার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জলপাইগুড়ি জেলা আদালত বৃহস্পতিবার তাঁদের তিন বছরের জেল ও জরিমানা করেছেন। ব্যবসা করার উদ্দেশে বেআইনিভাবে বাড়িতে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ ছাড়াও জীবন্ত ময়ূর, টিয়া রাখার অভিযোগে এই দু’জনকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়াও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে জলপাইগুড়ি জেলা আদালত। আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শৈবাল দত্ত এই নির্দেশ দেন। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের জেলের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আদালতের এই নির্দেশে খুশি জলপাইগুড়ির পরিবেশকর্মীরা। ওই দুই ব্যক্তির নাম কৃষ্ণ ছেত্রী ও অঞ্জন মিশ্র।
জানা গিয়েছে, কৃষ্ণ ছেত্রী নামে ওই ব্যক্তি ব্যবসা করবেন বলে অবৈধভাবে বাড়িতে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ ছাড়াও ময়ূর, টিয়া, পাখি রাখতেন। গত বছর ৮ নভেম্বর বৈকুন্ঠপুর বন বিভাগের ডাবগ্রাম রেঞ্জের বনকর্মীরা কৃষ্ণ ছেত্রীকে গ্রেফতার করে। এরপর তাঁকে আদালতে তোলা হয়। তাঁর বাড়ি থেকে সে সময় জীবন্ত ময়ূর, কচ্ছপের খোল ছাড়াও দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র, তির ধনুক উদ্ধার হয়।
কৃষ্ণ ছেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই গত বছর ১৮ নভেম্বর অঞ্জন মিশ্র নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেন বনকর্মীরা। তাঁর বাড়ি থেকেও টিয়াপাখি, বন্যপ্রাণীর দেহাংশ, বন্দুক, তির-ধনুক উদ্ধার হয়। দু’জনই বিচারাধীন বন্দী হয়ে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁদের সাজা ঘোষণা করা হয়।
সরকারি আইনজীবী মৃণ্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই দু’জনের নামে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে মামলা দায়ের হয়েছিল। পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র রাখার জন্যও আলাদা মামলা হয়। জেলা আদালত দু’জনের জামিনের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছিল। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চেও তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। বরং সার্কিট বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেলা আদালতে ট্রায়াল শেষ করতে হবে। সেইমতোই ৯ ফেব্রুয়ারি জেলা আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাজা শোনালেন।
এই রায়ে খুশি জলপাইগুড়ির পরিবেশকর্মী শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে। তিনি বলেন, “আমরা বন, বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের রক্ষায় সবসময় সোচ্চার হই। অনেকে সচেতনও হয়েছে। তবে বন্যপ্রাণ আইনকে তোয়াক্কা না করে অবৈধ কারবারও চালাচ্ছেন কেউ কেউ। তবে আদালত যে রায় শোনালেন তা খুব একটা শোনা যায় না। এমন নির্দেশ অপরাধ দমনের পাশাপাশি আমাদের কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।”